ক্ষুধা ও বেকারত্বের দেশে বিশ্বকাপ কেন? এই প্রশ্নে জ্বলছে সাও পাওলো থেকে রিও।
ব্রাজিলের মহিলা-সমর্থকুলের ‘হার্টথ্রব’ এই মুহূর্তে কে?
ফ্রেড। তাঁর ৯ নম্বর জার্সিতে ভিন্ন ব্র্যান্ডের দু-দু’টো লিপস্টিকের দাগ পাওয়া গিয়েছে!
ফুটবলসম্রাট পেলে ঠিক কী চাইছেন এই মুহূর্তে?
চাইছেন ফাইনালে উরুগুয়ে উঠুক। ব্রাজিলের সামনে পড়ুক। ’৫০-এর ফাইনালের ‘রিম্যাচ’ হোক। আর এ বার উরুগুয়েকে ছিঁড়ে ফেলে ’৫০-এর ফাইনালে হারের যন্ত্রণার উপযুক্ত প্রতিশোধ নিক ব্রাজিল!
মারাকানা কী অভিনবত্ব আনতে চাইছে ১৩ জুলাই?
চাইছে, রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে স্টেডিয়ামকে চ্যাম্পিয়ন টিমের জার্সির রংয়ে আলোকিত করে ফেলতে। ব্রাজিল জার্সির রংয়ে চর্তুদিক আলোকিত করে শুক্রবার একপ্রস্থ পরীক্ষা হয়ে গেল। মারাকানা কর্তৃপক্ষ এখন অপেক্ষা করছে, ফিফার অনুমতির।
উপরের ঘটনাবলীতে চোখ রাখলে ব্রাজিলের প্রাক্-বিশ্বকাপ রঙিন আবহই চোখে পড়বে। যেখানে উন্মাদনা থেকে শুরু করে নানাবিধ প্রার্থনা, সব আছে। কিন্তু ব্রাজিলের আসল মেজাজ কোনও ভাবেই ধরা যাবে না।
ব্রাজিল উত্তপ্ত। উত্তপ্ত— নেইমারকে নিয়ে ক্লাব বনাম দেশের অর্ন্তদ্বন্দে।
ব্রাজিল উত্তপ্ত। উত্তপ্ত— দেশের আভ্যন্তরীণ গণ্ডগোলে।
বিশ্বকাপের যখন আর ঠিক ছাব্বিশ দিন বাকি, তখনই নেইমারকে নিয়ে বার্সেলোনা এবং ব্রাজিলের টানাটানি শুরু হয়ে গেল। সাও পাওলোর ‘ওয়ান্ডারকিড’ সমর্থকদের স্বস্তি বাড়িয়ে এ দিন প্র্যাকটিসে নেমে পড়লেন বটে, কিন্তু তাঁকে ঘিরে নতুন বিতর্কও বেঁধে গেল।
বার্সেলোনা চাইছে, নেইমারকে আটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে নামিয়ে দিতে। লিগের যেটা শেষ ম্যাচ। যেখানে চ্যাম্পিয়ন হলেই লা লিগা জিতে ফেলবে বার্সা।
ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন বলছে, নেইমার সম্পূর্ণ সুস্থ নন। তাঁকে ক্লাব ম্যাচে নামানোর কোনও যুক্তি এখন হয় না। বরং বিশ্বকাপের কথা ভেবে বার্সার উচিত নেইমারকে টিমের বাইরে রাখা। যা নিয়ে সিবিএফ আবেদনও করেছে বার্সেলোনাকে।
কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত যা খবর, তেমন কোনও লাভ হয়নি। লা লিগায় শনিবার আটলেটিকোর বিরুদ্ধে যে চব্বিশ জনের টিম দিয়েছে বার্সেলোনা তাতে নেইমারকে রেখেছেন বার্সা কোচ জেরার্দো মার্টিনো। কারণটা খুব সহজ, আটলেটিকোর আঁটোসাঁটো ডিফেন্সকে বার্সার প্লেয়ারদের মধ্যে একমাত্র ভাঙতে পেরেছেন নেইমার। মনে করা হচ্ছে, পুরো সময়ের জন্য না হলেও কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চিত ভাবে নাকি মাঠে দেখা যাবে ব্রাজিল-বোমাকে। যার পাল্টা দিতে নেমে পড়েছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনও। নেইমারের বাবাকে দিয়ে তারকা ফুটবলারকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে, নেইমার বার্সার হয়ে নামলে বিপদ তাঁর আরও বাড়তে পারে। হাঁটুর চোট তাঁর এখনও পুরোপুরি সারেনি। এই অবস্থায় নেমে যদি আবার লেগে যায়, তা হলে বিশ্বকাপে মারাত্মক ধাক্কা খাবে ব্রাজিল। মহাতারকা ফুটবলারের স্পনসররাও চিন্তিত। নেইমার কোনও ভাবে চোট পেয়ে গেলে তাদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
বিক্ষোভের মাঝে হঠাৎ নেইমার-নাটক।
নেইমারকে নিয়ে এমন বিতর্কের মধ্যে আবার জঙ্গি মেজাজে আবির্ভূত হলেন ব্রাজিলের একটা অংশের মানুষ। সাও পাওলোর যে মাঠে মুখোমুখি হতে চলেছে ইংল্যান্ড ও উরুগুয়ে, সেই স্টেডিয়ামের বাইরে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বেঁধে গেল, ব্রাজিল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-ব্যানারে লিখে ফেলা হল—বিশ্বকাপ নয়। আমরা শিক্ষা চাই। টায়ার পুড়িয়ে, গাড়ি ভেঙে, রাস্তা আটকে চলতে থাকে বিক্ষোভ প্রদর্শন। পাল্টা টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে হয় পুলিশকে। এবং শুধু সাও পাওলো নয়, বিক্ষোভ চলেছে সর্বত্র। রিওতে বিক্ষোভকারীরা ট্র্যাফিক আটকে রাস্তায় বসে পড়েনা। চিৎকার করতে থাকেন, “গো হোম ফিফা,” বলে। ব্রাজিলের ক্রীড়ামন্ত্রী আলদো রেবেলো বলছেন বটে যে, “সব প্রতিবাদ মোটেও বিশ্বকাপের বিরুদ্ধে নয়। আর ব্রাজিল তো ইরাকের মতো যুদ্ধক্ষেত্র নয়। কোনও সমস্যা হবে না।” কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে এমন গণ্ডগোল মোটেও প্রশাসনকে ভরসা যোগাচ্ছে না। বরং নেইমরারে হাঁটুর ভবিষ্যতের মতো বিশ্বকাপ সংগঠকদের ভবিষ্যতকেও আশঙ্কাপূর্ণ দেখাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy