Advertisement
০৩ মে ২০২৪
রাতের পার্টিতে খোশমেজাজে শ্রীনিবাসন

বার্ষিক সভা পিছোনোর নতুন রাস্তা হয়তো বেরিয়ে যাবে আজই

পাঁচ মাস পর আজ, শুক্রবার বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভা। আদালতের নির্দেশে সরে দাঁড়ানো বোর্ড প্রেসিডেন্ট নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন এই সভায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু সভা হচ্ছে তাঁর শহরেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৮
Share: Save:

পাঁচ মাস পর আজ, শুক্রবার বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভা। আদালতের নির্দেশে সরে দাঁড়ানো বোর্ড প্রেসিডেন্ট নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন এই সভায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু সভা হচ্ছে তাঁর শহরেই। সশরীরে না থেকেও রিমোট কন্ট্রোলে যাতে তাঁর এই সভা পরিচালনা করতে সুবিধা হয় সে জন্যই চেন্নাইয়ে সভা, বোর্ডের একাংশে সে রকমই ধারণা। আর যে সভার নিয়ন্ত্রণ শ্রীনির হাতে, সেখানে এই মুহূর্তে বার্ষিক সাধারণ সভার দিনক্ষণ স্থির হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২১ দিনের নোটিস দিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকতেই হবে। কিন্তু নিজেদের গঠনতন্ত্রকেই অগ্রাহ্য করে না দেওয়া হয়েছে ২১ দিনের নোটিস, না দেখা যাচ্ছে এই মাসের মধ্যে বার্ষিক সভার কোনও সম্ভাবনা। বোর্ডের অন্দরমহলে এই নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও সভায় তা কে কতদূর প্রকাশ করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। বরং গত ৭ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়েই শ্রীনিবাসনের ডাকা বেসরকারি বৈঠকেই এই সভার রিহার্সাল সেরে নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন এক বোর্ড কর্তা। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট শিবলাল যাদব বার্ষিক বাজেট, বার্ষিক রিপোর্ট বা ব্যালান্স শিটে যে সই করবেন না, তা ঠিক হয়েই গিয়েছে। আদালত শ্রীনিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত বার্ষিক সভা না ডাকারই সিদ্ধান্ত সম্ভবত হতে চলেছে শুক্রবার। বার্ষিক সভা যে দু’মাস বা তিন মাস পরে হবে, এটা সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কিন্তু প্রথা মেনে দিনক্ষণ স্থির করে সরকারি ভাবে বার্ষিক সভা ডাকার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন সভায় যোগ দিতে আসা প্রতিনিধিরা।

কিন্তু যেখানে বোর্ডের গঠনতন্ত্রে এই এজিএম পিছনোর নিয়ম নেই, সেখানে তা করতে হলে অন্তত কিছু একটা আইনানুগ পথ তো বার করতেই হবে। সে রকমই একটা পথ শ্রীনিবাসন বের করে ফেলেছেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে শোনা গেল।

কী সেই পথ? যেহেতু বোর্ডের গঠনতন্ত্রে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট বলে কোনও পদের উল্লেখ নেই, তাই তার ক্ষমতা বা অধিকার নিয়েও কিছু লেখা নেই। এই যুক্তিতেই হয়তো ওয়ার্কিং কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে প্রেসিডেন্ট তাঁর অধিকার প্রয়োগ করার অবস্থায় না আসা পর্যন্ত বার্ষিক সভা ডাকা হবে না। এবং এজিএম পিছনোর একমাত্র আইনানুগ রাস্তা এখন ‘তামিলনাড়ু সোসাইটিজ’-এর রেজিস্ট্রারের অনুমতি। বোর্ড যেহেতু এদেরই নথিভুক্ত সংস্থা, তাই এই অনুমতি পেয়ে গেলে আর এজিএম পিছনোর কোনও আইনি বাধা থাকবে না বলেই সদস্যদের জানিয়েছেন শ্রীনিবাসন। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের শহরে এক পাঁচতারা হোটেলে দেওয়া নৈশভোজে হাজির হয়ে তিনি না কি অনেককেই এ কথা বলেছেন। মোটামুটি যা ঠিক হয়েছে, তা হল, তিন মাসের জন্য বার্ষিক সভা পিছনোর আবেদন জানানো হবে রেজিস্ট্রারের কাছে। এক বোর্ড কর্তার মতে, “বাকিটুকুর দায়িত্ব নিয়েছেন শ্রীনিবাসন।”

এ সব কিছুর উদ্দেশ্য একটাই। শ্রীনিবাসনকে আরও একটি টার্মের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে বহাল রাখা। কেউ যে শুক্রবারের সভায় উঠে দাঁড়িয়ে বলবেন, যা হচ্ছে, তা একজনের স্বার্থের কথা ভেবেই হচ্ছে, বোর্ড বা ক্রিকেটের উন্নতির কথা ভেবে নয়, সে রকম ইঙ্গিত এ দিন রাত পর্যন্ত নেই। চেন্নাইয়ে পৌঁছনো কোনও প্রতিনিধির মধ্যে তেমন কোনও মেজাজই না কি এই নৈশভোজের পার্টিতে দেখা যায়নি। শ্রীনিও বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন বলে জানা গেল। পার্টি থেকে না কি বেশ নিশ্চিন্তেই বেরোন তিনি।

অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে রবি শাস্ত্রীকে ভারতীয় দলের টিম ডিরেক্টর পদে বহাল রাখা নিয়ে আলোচনা হতে পারে শুক্রবার। শোনা গেল শাস্ত্রী আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফর ও বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের সঙ্গে থাকতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজে তিনি দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। ভারতীয় সাপোর্ট স্টাফকেও বহাল রাখা হতে পারে বলে খবর। রাজস্থানের ক্রিকেটারদের স্বার্থ বজায় রেখে কী করে রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গে যুদ্ধ জারি রাখা যায়, সেই রাস্তাও ঠিক হতে পারে এ দিনের সভায়।

ঘরের সংস্থায় নির্বাসিত হয়ে চাপে বোর্ডসচিব

নিজের ঘর থেকেই বিতাড়িত বিসিসিআই সচিব সঞ্জয় পটেল। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের বদান্যতায় ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করছেন যিনি, সেই বরোদার সঞ্জয় পটেলকে শনিবার তাঁর নিজের রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থাই (বিসিএ) নির্বাসন দিল। ফলে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এ বার কোন ক্ষমতার বলে তিনি বোর্ড সচিবের পদে থাকবেন? মূলত গোষ্ঠিদ্বন্দ্বের জেরে পটেলকে আগেই বিসিএ-র ম্যানেজিং কমিটি ও যুগ্মসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সংস্থার গঠনতন্ত্র মেনেই সেটা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন অংশুমান গায়কোয়াড়ের অনুগামী বিসিএ কর্তারা। সংস্থার সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদনও জানিয়েছিলেন পটেল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে যাওয়ার পরই বিসিএ রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁকে নির্বাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

meeting working committiee bcci srinivasan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE