Advertisement
E-Paper

বিশ্বকাপে মেসিকে আটকানোর টোটকা দিয়ে গেলেন সিমিওনে

ব্রাজিল বিশ্বকাপের ব্যাপারটা মাথায় রেখে ম্যাচ রিপোর্টটটা লিখতে বসে মনে হচ্ছে, আটলেটিকো মাদ্রিদ ম্যাচ কি এক মহাতারকা ফুটবলারকে আটকানোর স্ট্র্যাটেজির খোঁজ দিয়ে গেল? খোলাখুলি বললে, রিও-তে লিওনেল মেসিকে আটকানোর ফর্মুলা কি বেরিয়ে পড়ল বুধবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে? বিশ্বকাপের এখনও দু’মাস বাকি। বাড়াবাড়ি শোনাতে পারে, কিন্তু লিও মেসির বিরুদ্ধে দিয়েগো সিমিওনে-র কাউন্টার স্ট্র্যাটেজি কিন্তু বিশ্বের বড়-বড় কোচের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। অন্তত নিজের ক্ষুদ্র ফুটবল-বুদ্ধিতে আমার তাই মনে হয়েছে। তিনটে মুভ দেখলাম ম্যাচে। যা সিমিওনে ব্যবহার করলেন মেসিকে আটকাতে।

ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪২
মাদ্রিদে ম্লান

মাদ্রিদে ম্লান

আটলেটিকো মাদ্রিদ ১ (কোকে)

বার্সেলোনা ০

ব্রাজিল বিশ্বকাপের ব্যাপারটা মাথায় রেখে ম্যাচ রিপোর্টটটা লিখতে বসে মনে হচ্ছে, আটলেটিকো মাদ্রিদ ম্যাচ কি এক মহাতারকা ফুটবলারকে আটকানোর স্ট্র্যাটেজির খোঁজ দিয়ে গেল?

খোলাখুলি বললে, রিও-তে লিওনেল মেসিকে আটকানোর ফর্মুলা কি বেরিয়ে পড়ল বুধবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে?

বিশ্বকাপের এখনও দু’মাস বাকি। বাড়াবাড়ি শোনাতে পারে, কিন্তু লিও মেসির বিরুদ্ধে দিয়েগো সিমিওনে-র কাউন্টার স্ট্র্যাটেজি কিন্তু বিশ্বের বড়-বড় কোচের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। অন্তত নিজের ক্ষুদ্র ফুটবল-বুদ্ধিতে আমার তাই মনে হয়েছে।

তিনটে মুভ দেখলাম ম্যাচে। যা সিমিওনে ব্যবহার করলেন মেসিকে আটকাতে।

এক) বল ধরে মেসির টার্ন নেওয়া বন্ধ করে দিলেন। যার ফলে কোনও আক্রমণ তৈরি করতে পারছিল না মেসি।

দুই) মেসি একবার বল পেলেই ‘শ্যাডো ডিফেন্ডিং’ চালু করে দিচ্ছিলেন সিমিওনে। মানে, মেসির পায়ে বল গেলেই ওকে ঘিরে ধরছিল দুই থেকে তিন জন আটলেটিকো প্লেয়ার।

তিন) নেইমার-জাভি-ইনিয়েস্তার সঙ্গে ওর সাপ্লাই কেটে দেওয়া হল।

আশ্চর্যের হচ্ছে, নব্বই মিনিটে মেসিকে একবারও দেখলাম না এর পাল্টা কোনও কিছু বার করতে। উল্টে সাপোর্ট না পেয়ে ওকে আরও বিভ্রান্ত দেখাতে শুরু করল। ভাবতে পারেন, লিও মেসির মতো ফুটবলার পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে শট গোলের বেশ কয়েক হাত বাইরে মারছে! ফ্রিকিক মারছে ডিফেন্ডারদের ‘ওয়াল’-এ! যা কিনা দশ বারের মধ্যে আট বার টার্গেটে রাখবে। দানি আলভেজের দুর্দান্ত সেন্টারে একটা হেড নিলসেটাও বাইরে!

কোথায় আটকালেন মেসি। সবিস্তার...

আসলে মেসির মতো বল প্লেয়ারদের সফল হতে গেলে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে, বলটা ঠিকঠাক পাওয়া। বলের সাপ্লাই যদি আটকে দেওয়া যায়, তা হলে ওর মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারকেও যে আটকানো সম্ভব সিমিওনে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন। জাভি-ইনিয়েস্তার সঙ্গে সামান্যতম যোগসূত্র তৈরি করতে দেননি সিমিওনে। জুয়ানফ্রান, ফিলিপে লুইস সবাই কড়া নজরে রাখল মেসিকে। এমনিতেই আটলেটিকো অন্য লা লিগা দলগুলোর থেকে আলাদা। মানে, ফিজিকাল। শক্তি ব্যবহার করে খেলে। যা মেসির বিরুদ্ধেও কাজে দিল। মেসির মতো ফুটবলার জায়গা না পেলে নিজের সেরাটা দিতে পারে না। আর প্রায় পুরো আটলেটিকো টিম গোলের পর নীচে নেমে ডিফেন্স করে যাওয়ায় মেসিকে বল পায়ে রাখতে বেশি সময় দিচ্ছিল না। যার ফলে বেশির ভাগ সময় স্কোয়ার পাস বা দূর থেকে শটের চেষ্টায় যেতে হল। ফাব্রেগাসও বুধবার ভাল খেলতে পারেনি। ওকে ফরোয়ার্ডে নামিয়েছিল মার্টিনো। কিন্তু ওকে তো খুঁজেই পাওয়া গেল না! একটা ভাল সেন্টার ফরোয়ার্ড না থাকলে যে কী অবস্থা হয়, টাটা মার্টিনো নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। বরং বলব, বার্সেলোনার কপাল ভাল। দাভিদ ভিয়া যা শুরু করেছিল, তাতে প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে তিন গোল খেয়ে যায় বার্সেলোনা! ভিয়ার দু’টো শট বারে লেগে বেরিয়ে গেল।

লা লিগা নিয়ে কথা উঠলেই সাধারণত মেসি-রোনাল্ডোকে নিয়ে কথা হয়। কিন্তু স্প্যানিশ লিগে বার্সেলোনা-রিয়ালের বাইরেও যে কত প্রতিভাবান ফুটবলার থাকতে পারে, বুধবারের রাত সেটাও দেখিয়ে গেল। আটলেটিকোর কোকে, দিয়েগো কোস্তা, ভিয়া যে বার্সা বা রিয়ালকে দেখলে ভয় পায় না, প্রমাণ পাওয়া গেল। আটলেটিকোর ডিফেন্সও খুব ভাল। ফিলিপে লুইস, জুয়ানফ্রান, মিরান্ডার মতো ফুটবলাররা আছে যারা খুব অভিজ্ঞ। তরুণ গোলকিপার থিবাও কুরতোয়ার প্রশংসাও করতে হবে। প্রতিটা ম্যাচে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে। ওর ডিস্ট্রিবিউশন খুব ভাল। গ্রিপিং অসাধারণ। এক পোস্ট থেকে আর এক পোস্ট কভারিংটাও ভাল।

সত্যি বলতে, লা লিগা শেষ পর্যন্ত যদি আটলেটিকো জেতে, অবাক হব না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বার্সাকে ছিটকে দেওয়া কিন্তু ফ্লুকে হয় না।

messi champions league bhaskar gangopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy