Advertisement
E-Paper

বয়স ভাঁড়ানোয় নির্বাসিত সুতীর্থা, শাস্তির কোপে বাংলার আরও দুই

পুদুচেরিতে মৌমা দাস-সৌম্যজিত্‌ ঘোষদের আলো আনার দিনে বাংলার টেবল টেনিসে অন্ধকারও নামল। ভারতীয় টেবল টেনিসের ইতিহাসে প্রথম বার বয়স ভাঁড়ানোর দায়ে নজিরবিহীন শাস্তির মুখে পড়লেন বাংলার তিন কন্যাকাঁকিনাড়ার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, হাওড়ার প্রিয়দর্শিনী দাস এবং শিলিগুড়ির ঐশ্বর্যা দেব। তাঁদের দু’বছর সাসপেন্ড করার মতো কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি পঁচিশ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে টিটিএফআই। ফলে তিন বঙ্গকন্যার খেলোয়াড় জীবন নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০১
দু’বছর সাসপেন্ড সুতীর্থা, সঙ্গে জরিমানাও।

দু’বছর সাসপেন্ড সুতীর্থা, সঙ্গে জরিমানাও।

পুদুচেরিতে মৌমা দাস-সৌম্যজিত্‌ ঘোষদের আলো আনার দিনে বাংলার টেবল টেনিসে অন্ধকারও নামল।

ভারতীয় টেবল টেনিসের ইতিহাসে প্রথম বার বয়স ভাঁড়ানোর দায়ে নজিরবিহীন শাস্তির মুখে পড়লেন বাংলার তিন কন্যাকাঁকিনাড়ার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, হাওড়ার প্রিয়দর্শিনী দাস এবং শিলিগুড়ির ঐশ্বর্যা দেব। তাঁদের দু’বছর সাসপেন্ড করার মতো কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি পঁচিশ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে টিটিএফআই। ফলে তিন বঙ্গকন্যার খেলোয়াড় জীবন নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে।

শনিবার ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পর তিন মেয়ের শাস্তি ঘোষণার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট প্রভাত সি চর্তুবেদী বলে দেন, “ওঁদের অফিসকেও আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। ওঁরা আগামী জাতীয় টেবল টেনিস-সহ কোনও টুর্নামেন্টেই অংশ নিতে পারবেন না।” বয়স ভাঁড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত আর এক মেয়ে ঐহিকা মুখোপাধ্যায়কে অবশ্য ছেড়ে দিয়েছে ফেডারেশন। কারণ, অন্যদের মতো জন্মের দু’টো সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও ঐহিকা তার সুযোগ নিয়ে কোনও টুর্নামেন্ট জেতেননি।

যে তিন জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে সবথেকে প্রতিশ্রুতিমান সুতীর্থা-ই। পরপর তিনটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল সুতীর্থার হাত ধরেই নতুন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন পাবে বাংলা। কিন্তু বয়স ভাঁড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় টেবল টেনিসে দেশের এক নম্বর মেয়ে খেলায়াড়কে পুদুচেরির জাতীয় টিটিতে এ বার নামতেই দেওয়া হয়নি।

ফেডারেশন যখন তাঁর শাস্তির কথা ঘোষণা করছে তখন মিহির ঘোষের ছাত্রী নৈহাটিতে অনুশীলনে ব্যস্ত। অন্তত তাই জানাচ্ছেন তাঁর বাবা এবং মা। মেয়ের শাস্তির খবর শুনে আকাশ থেকে পড়েন দু’জনেই। ফোনে সুতীর্থার মা নীতা মুখোপাধ্যায় বললেন, “এ রকম শাস্তি হয়েছে না কি? সত্যিই বিশ্বাস হচ্ছে না আমার। মেয়ে আগেই প্রচণ্ড মানসিক কষ্টে ভুগছে। প্লিজ ওকে এটা বলবেন না।” বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও সুতীর্থার সঙ্গে কথা বলতে দিতে চাননি ওঁর মা। বলে দেন, “ও একটু সামলে নিক। দু’তিন দিন পর কথা বলবেন।” বাবা অভিজিত্‌ মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, “ছোটবেলায় যেমন সবাই করে সে রকমই হয়তো কিছু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তা বলে এত বড় শাস্তি! বাড়ি গিয়ে দেখি কী করা যায়।”

সুতীর্থার মতো বড় সাফল্য না পেলেও শিলিগুড়ির ঐশ্বর্যা দেব জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। প্রিয়দর্শিনীও যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিমান।

তিন বঙ্গকন্যার কড়া শাস্তির খবর শুনে মর্মাহত তাঁদের দুই পূর্বসূরি মৌমা দাস এবং পৌলমী ঘটক। পুদুচেরিতে ফোনে ধরা হলে সদ্য জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মৌমা বললেন, “আনন্দের দিনে এ রকম একটা খবর পেয়ে খারাপ লাগছে।” আর পৌলমীর মন্তব্য, “বয়স ভাঁড়ানোকে সমর্থন করি না। শুনেছিলাম ওদের বড় জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেটা হলে ভাল হত। সুতীর্থাকে তো দেশের ভবিষ্যত্‌ বলা হচ্ছিল। খুব ভাল খেলছিল। খারাপ লাগছে।”

বাংলার তিন মেয়ের সাসপেন্ড হওয়ার খবরে অবাক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য টেবল টেনিস সংস্থার প্রেসিডেন্ট আনন্দবাজারের কাছে খবর পেয়ে বললেন, “জানি না তো? বয়স ভাঁড়ানোর ব্যাপারটা বন্ধ হওয়া দরকার। দেখি, কথা বলব।”

অবশ্য সর্বভারতীয় ফেডারেশনের যা মনোভাব, তাতে সুতীর্থাদের শাস্তি কমার সম্ভবনা নেই। টেবল টেনিসের বয়স ভাঁড়ানো নিয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্ত চলছে দিল্লির এক খেলোয়াড়ের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে। মনে করা হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সাসপেনসন। ফেডারেশেন প্রেসিডেন্ট বলে দিয়েছেন, “আমরা বয়সের ব্যাপারটা কড়া হাতে দমন করব। এর পর কেউ ধরা পড়লে আরও বড় শাস্তি হবে।”

table tennis puduchery fake birth certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy