Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মামলার খরচের ধাক্কায় ক্রিকেটে ব্যয়সঙ্কোচ

এক দিকে সারা বছর ধরে চলা একাধিক মামলা-মোকদ্দমার ধাক্কা সামলাতে দেশের দুঁদে আইনজীবীদের বিপুল পারিশ্রমিক। অন্য দিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বোর্ড কর্তাদের আতিথেয়তায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়। এ সবের পিছনে বিপুল ব্যয় করলেও দেশের ক্রিকেটের পিছনে খরচ কমিয়ে দিচ্ছে শ্রীনিবাসনের বোর্ড।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৪
Share: Save:

এক দিকে সারা বছর ধরে চলা একাধিক মামলা-মোকদ্দমার ধাক্কা সামলাতে দেশের দুঁদে আইনজীবীদের বিপুল পারিশ্রমিক। অন্য দিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বোর্ড কর্তাদের আতিথেয়তায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়। এ সবের পিছনে বিপুল ব্যয় করলেও দেশের ক্রিকেটের পিছনে খরচ কমিয়ে দিচ্ছে শ্রীনিবাসনের বোর্ড।

যার জন্য এত রমরমা ভারতীয় বোর্ডের, সেই ক্রিকেট খেলার উন্নতির জন্য ব্যয় কমিয়ে দিল তারা। শুক্রবার বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় যে বার্ষিক হিসাব পাশ হল, সেই হিসাব অনুযায়ী ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ক্রিকেটের জন্য বোর্ডের খরচ হয়েছে ৫১৬ কোটি টাকা। অথচ গত আর্থিক বছরে আরও ৩৫ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করা হয়েছিল।

এ বার তা কমে গেল কেন? বোর্ডের ফিনান্স কমিটির এক সদস্যের কথায়, “ক্রিকেটের বাইরের খরচ এত বেশি হয়ে গিয়েছে যে, ক্রিকেটের জন্য তাই খরচ কমাতেই হচ্ছে।” শুধু ক্রিকেটের জন্য খরচ কমেছে, তা নয়। ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ স্পনসরশিপের লভ্যাংশ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে ৪৯ কোটি থেকে ১১ কোটিতে নামানো হয়েছে।

এমন নয় যে, বোর্ডের তহবিলে টান পড়েছে। অন্তত হিসাব তাই বলছে। শুক্রবার চেন্নাইয়ে ফিনান্স কমিটির সভায় পেশ হওয়া হিসাবে দেখা গিয়েছে, বোর্ডের আর্থিক উদ্বৃত্তের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৫২৬ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক সংস্থা হলে একেই বলা হত বোর্ডের বার্ষিক লাভ। যেহেতু তারা অ-লাভজনক সংস্থা, তাই একে উদ্বৃত্ত বলা হয়। গত বছরের (২০১২-১৩) চেয়ে এই উদ্বৃত্ত বেড়েছে ২১৪ কোটি টাকা। অর্থাত্‌ প্রায় ৬৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি। তা সত্ত্বেও এ দিন বোর্ড জানিয়ে দিল, অনুমোদিত রাজ্য সংস্থাগুলির আর্থিক বরাদ্দ এ বছর উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাবে শুধুমাত্র স্পনসরশিপ ও মিডিয়া-স্বত্ব বাবদ হওয়া আয় কমার অজুহাতে।

গত আর্থিক বছরেও যেখানে বিভিন্ন রাজ্য সংস্থাগুলি বোর্ডের কাছ থেকে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা করে পেয়েছে, সেখানে এ বার তা কমে ১৮-২০ কোটির বেশি কিছুতেই হবে না। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ দিন বৈঠকে থাকা ফিনান্স কমিটির এক সদস্য বললেন, “গত আর্থিক বছরে দেশের মাঠে একটার বেশি আন্তর্জাতিক সিরিজ হয়নি। তা ছাড়া আইপিএলে দল কমে যাওয়ায় ম্যাচের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। সে জন্যই মিডিয়া ও স্পনসরশিপ স্বত্ব থেকেও আয় কমেছে।”

অথচ আইপিএলে আয় বেড়েছে। ৫৫৬ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪৪ কোটিতে। এমনকী চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির আয়ও ৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য মোট বরাদ্দের পরিমাণও বেড়ে হয়েছে ৫০২ কোটি টাকা।

শ্রীনিবাসনের তথাকথিত বিরোধী গোষ্ঠির দুই কর্তা সৌরাষ্ট্রের নিরঞ্জন শাহ ও বিদর্ভের কিশোর দিওয়ানি এ দিন ফিনান্স কমিটির বৈঠকের আগে বার্ষিক আর্থিক রিপোর্ট হাতে না পাওয়ায় বিতর্কের ঝড় তোলার চেষ্টা করেন। তাঁদের পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়, রিপোর্ট মিডিয়াতে ফাঁস হয়ে যেতে পারে ভেবেই তা আগে দেওয়া হয়নি। এক বোর্ড কর্তার অবশ্য অভিযোগ, “আর্থিক রিপোর্ট আগে দেখে নিয়ে বৈঠকে কেউ যাতে কোনও প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে জন্যই এই কৌশল। বৈঠকে আর্থিক হিসাব পেশ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা পাস করিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এমনটা করা হল। সবই পূর্বপরিকল্পিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bcci cricket srinivasan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE