Advertisement
E-Paper

মেহতাব সংশয়ে, হয়তো দু’সপ্তাহ মাঠের বাইরে

এক সমস্যা মিটতে না মিটতে হাজির আর এক সমস্যা। এ বার শিরোনামে দলের অধিনায়ক মেহতাব হোসেন। বুধবার গোয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফিফা ফ্রেন্ডলিতে হাঁটুতে চোট পাওয়ায় মহমেডানের বিরুদ্ধে আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে স্বয়ং মেহতাবই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪১
বৃহস্পতিবার অনুশীলনে কোলাসো। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

বৃহস্পতিবার অনুশীলনে কোলাসো। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

এক সমস্যা মিটতে না মিটতে হাজির আর এক সমস্যা। এ বার শিরোনামে দলের অধিনায়ক মেহতাব হোসেন। বুধবার গোয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফিফা ফ্রেন্ডলিতে হাঁটুতে চোট পাওয়ায় মহমেডানের বিরুদ্ধে আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে স্বয়ং মেহতাবই।

বৃহস্পতিবার সন্ধেয় শহরে ফিরেছেন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক। ফোনে বললেন, “জাতীয় দলের ডাক্তার, ফিজিও দেখেছেন। মনে হচ্ছে ১০-১২ দিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে।”

আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ ১১ মার্চ মহমেডানের বিরুদ্ধে। চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে থাকতে গেলে ওই ম্যাচ জিততেই হবে আর্মান্দোর দলকে। ওই ম্যাচের তিন দিন পরে যুবভারতীতে লাজং এফসি ম্যাচ। মেহতাবের কথা অনুযায়ী, ১০-১২ দিন বিশ্রামে থাকার অর্থ এই দুই ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে না। যা শুনে চিন্তিত কোচ আর্মান্দো। বললেন, “মেহতাব মাঝমাঠের অন্যতম সেরা অস্ত্র। ও না থাকলে দল সমস্যায় পড়বে বইকি। তবে শুক্রবার মাঠে ওর চোট পরীক্ষার পরেই বুঝতে পারব মহমেডান ম্যাচে আদৌ ওকে নামানো যাবে কি না।” ক্লাবের ডাক্তার সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত-ও কোচের মতোই বলছেন, “মেহতাবের চোট পরীক্ষা করা হয়নি। আগে ওকে দেখি, তার পর মন্তব্য করা যাবে।”

বুধবার সকালে অনুশীলনের পর কোচ আর্মান্দো মিডিয়ার সামনে মেহতাবকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। যেখানে তিনি বলেন, “মেহতাবকে বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার হিসেবে খেলাতে চাই। কিন্তু ও মর্গ্যান জমানার ৪-১-৪-১ ছকে ব্লকারের ভূমিকার বাইরে আসতে পারছে না। এটা কাটিয়ে তুলতে হবে।” ময়দানে ফিসফাস, হাঁটুর চোটে আগামী ১০-১২ দিন না-খেলতে পারার সম্ভাবনা হঠাৎ ভেসে ওঠা মেহতাব নিয়ে কোচের এই মন্তব্যের কারণে নয় তো? মেহতাব এ প্রসঙ্গে বললেন, “এ রকম রুচিহীন জল্পনার প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। আর কারও খেলা পছন্দ না হলে কোচ তাঁর বক্তব্য জানাতেই পারেন। তা বলে চোটের বাহানা দিয়ে সরে যাব না। শুক্রবার ডাক্তার দেখালে বিষয়টা পরিস্কার হবে।”

আর্মান্দো বললেন, “হাতে এখনও দশ ম্যাচ রয়েছে। সেখান থেকে যত বেশি সম্ভব পয়েন্ট তুলতে হবে। শেষ তিন ম্যাচে জিততে পারিনি। মহমেডান ম্যাচ জিতলেই কিন্তু টিমটা ছন্দে চলে আসবে।” এ দিন সকালে মোগা-সুয়োকা-ওপারাদের নিয়ে লাল-হলুদের অনুশীলন হয়েছে নিয়ম মেনেই। চিডি যদিও জগিং এবং জিম করেই তাঁবু ছাড়েন। তবে বুধবার মিডিয়ার সামনে দল নিয়ে আর্মান্দোর মন্তব্যের পর তালটা কোথাও না কোথাও যেন নড়বড়ে। অনুশীলনে হাসি-ঠাট্টা চললেও সাংবাদিকদের সামনে ফুটবলারদের মুখে কুলুপ। আর্মান্দো যদিও এ দিন বলেন, “দলের কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে তা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মিডিয়ার সামনে কথাগুলো বলেছি। কাউকে দোষারোপ করতে নয়।” এবং তাঁবু ছাড়ার আগে লাল-হলুদ কোচের সংযোজন, “মিডিয়ার রুচিহীন সমালোচনার জন্যই পিছিয়ে পড়ছে বাংলার ফুটবল।”

‘পরিস্থিতি’ সামাল দিতে এ দিনই ক্লাবের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ম্যাচের আগের দিন এবং ম্যাচের পর প্রথামাফিক প্রেস কনফারেন্স ছাড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কোচ কথা বলবেন না।” কিন্তু মুখে কিছু না বললেও কোচের মন্তব্যে ফুটবলারদের অনেকে ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁদের কেউ কেউ এ দিন বলেন, ট্রেভরের জমানায় ৪-১-৪-১ নয়, ইস্টবেঙ্গল খেলত ৪-১-৩-২ বা ৪-৩-১-২। তাঁদের প্রশ্ন, বর্তমান কোচ কি তা হলে মর্গ্যানের স্ট্র্যাটেজির সঠিক মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ? তাঁদের আরও বক্তব্য, দলে নেতা নেই বলে কোচ হা-হুতাশ করছেন। কিন্তু ফুটবলে সেই নেতৃত্বের দায়িত্ব তো কোচই নেবেন। এখানেই শেষ নয়। মেহতাবকে বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার খেলানোর পরিকল্পনা নিয়েও ফুটবলারদের প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ৪-৪-২ ছকে খেলতে গিয়ে আক্রমণ এবং রক্ষণে আকার থাকছে না। বিপক্ষের প্রতিআক্রমণে রক্ষণের মুখ খুলে যাচ্ছে। টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে কোচের সারিয়ে তোলা উচিত ছিল। বদলে মিডিয়ার কাছে তাঁর কথায় কোচ-ফুটবলারে দূরত্ব বেড়েছে। স্বয়ং আর্মান্দো যদিও বলছেন, “ফুটবলাররা আমার কাছে সন্তানের মতো। ওদের সঙ্গে বসে আগামী দশ ম্যাচে জেতার স্ট্র্যাটেজি বানাব। আই লিগে এখনও চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে আছি আমরা।”

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর মোহনবাগানের কাছে ৩-৫ হারার দু’মাসের মধ্যেই গুয়াহাটিতে ফিলিপ ডি’রাইডারের ইস্টবেঙ্গল ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গোল না খেয়ে। ম্যান ম্যানেজমেন্টে দক্ষ গোয়ান আর্মান্দো এই পরিস্থিতিতে সে রকম কোনও তাস বের করতে পারবেন কি? আপাতত সেটাই প্রশ্ন লাল-হলুদে।

mehtab hossain armando colaco east bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy