মধ্যমণি মনোজ তিওয়ারি। শুক্রবার ইডেনে টিম-কালীঘাট। ছবি: উত্পল সরকার
বিদুত্গতিতে বল বাউন্ডারি পেরোতেই ব্যাটটা হাওয়ায় এক পাক ঘুরিয়ে নিলেন মনোজ তিওয়ারি। বহু দিন পর জে সি মুখোপাধ্যায় ট্রফি জেতার উত্সব তখন স্বয়ং কালীঘাটের তারকা ক্যাপ্টেনের উল্লাসে। ততক্ষণে মনোজের সতীর্থরাও ইডেনের ভেতর ঢুকে সেলিব্রেশন শুরু করে দিয়েছেন।
২০০৮-এ কালীঘাটের স্থানীয় ক্রিকেটে পঞ্চমুকুট জয়ের স্মরণীয় মরসুমের পর এই প্রথম জেসিতে দাপট মনোজ-দিন্দাদের দলের। সেমিফাইনালের বড় ম্যাচ জেতা ইস্টবেঙ্গলকে শুক্রবার ফাইনালে ছ’উইকেটে হারিয়ে।
এবং তার সেলিব্রেশন হয়ে উঠল যেন লাগামহীন! হইহই করে ছুটে এসে মাঠের মধ্যেই চিত্কার করে মনোজকে জড়িয়ে ধরলেন সন্দীপন, সৌরাশিস, প্রীতমরা। এর মধ্যে তিরের মতো এক জন মাঠে ছুটে এলেন কালীঘাটের ক্লাব পতাকা হাতে। ফটোগ্রাফার আর টিভি ক্যামেরার সামনে পোজ দেওয়াও চলল দেদার।
মরসুমের শীতলতম দিনে কুড়ি ওভারের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের উষ্ণতার খোঁজে ইডেনে ভিড় জমিয়েছিলেন বেশ কিছু দর্শক। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পরই তাঁদের হতাশ হতে হয়। ইস্টবেঙ্গল ৬২-৫। তাদের ব্যাটসম্যানদের এ দিন মাথা তুলতেই দিলেন না দিন্দারা। আঘাত হানলেন শিবশঙ্কর পাল (২-২০), সায়নশেখর মন্ডলরাও (২-১২)। দিন্দাই (১-১৭) প্রথম ঝটকাটা দেন ওপেনার বিদুত্ অধিকারীকে ফিরিয়ে। তিন পেসারের বোলিংয়ের ঝাঁঝে ইস্টবেঙ্গল টপ অর্ডারে ধস নামে। শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থেমে যায় ১২৮-৮।
কার্যত বল প্রতি এক রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে কালীঘাটের শুরুটাও অবশ্য তেমন ভাল হয়নি। প্রথম ওভারেই রবিকান্ত সিংহের (৩-১২) শিকার হয়ে জোড়া শূন্য করে ফেরেন শ্রীবত্স গোস্বামী আর শুভম দে। কিন্তু সেই ঝড় সামলে নেন দুরন্ত ফর্মে থাকা সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (৫৬)। সৌরাশিস লাহিড়ীও করে যান ৩৫ রান। ম্যাচের পর সুদীপ বলছিলেন, “বল মুভ করছিল প্রথম দিকে। তাই আমাদের মাথায় ছিল প্রথমে ২-৩ ওভার ধরে খেলার। তার পর চালাব।” যার শেষটা আসে মনোজের (২৩ ন.আ.) ব্যাটে।
মনোজ বললেন, “দারুণ লাগছে। ছেলেরা খুব উত্তেজিত এই ট্রফি জিতে। যে ভাবে জিতেছি তার পর আরও আনন্দ হচ্ছে।” তবে জেসি-জয়ের মধ্যেও এক দিন পরই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জি ম্যাচের ব্যাপারটাও ভুলছেন না মনোজ। বলে দেন, “মুম্বই ভাল দল। আগের ম্যাচটাই জিতে এখানে খেলতে আসছে। জম্মু-কাশ্মীরের কাছে হারের ধাক্কা ওরা ওখানেই অনেকটা সামলে নিয়েছে। আমাদের ভাল খেলতেই হবে।” সুদীপের মুখেও স্থানীয় ট্রফি জয়ের পাশাপাশি একই সুর, “যে কোনও ফাইনালই সব সময় স্পেশ্যাল। তা ছাড়া চাপ সামলে জয়টা এসেছে। সেটাও পরের রঞ্জি ম্যাচে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy