প্রতীকী ছবি।
স্কুলে পড়ুয়াদের যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা উদ্বিগ্ন। শনিবার শুরু হওয়া অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুলের ৯৮তম বার্ষিক সভা চলবে কাল, মঙ্গলবার পর্যন্ত। রবিবার লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ়ে ওই সভায় উদ্বিগ্ন অধ্যক্ষদের মধ্যে থেকে প্রস্তাব এল, পড়ুয়াদের উপরে যৌন নির্যাতনের মোকাবিলায় একটি কমিটি গঠনের ব্যবস্থা হোক। সব স্কুলে সিসি ক্যামেরা আবশ্যিক করার কথাও বললেন অনেক বক্তা।
কলকাতার উইল্যান্ড গোল্ডস্মিথ স্কুলের অধ্যক্ষ গিলান হার্ট জানান, স্কুলে অনেক সময় দেখা যায়, কোনও পড়ুয়াকে নির্যাতন করল উঁচু ক্লাসের এক বা একাধিক পড়ুয়া। ‘‘স্কুলে একটা কমিটি থাকা দরকার, যারা বিষয়টি দেখভাল করবে। সেই কমিটিতে স্কুলশিক্ষক ছাড়াও অভিভাবকদের প্রতিনিধি রাখতে হবে। অনেক স্কুলে অভিভাবকেরাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন। তাঁদের মতামতও গ্রহণ করতে হবে,’’ বলেন হার্ট।
অধ্যক্ষেরা জানান, শুধু সহশিক্ষার স্কুলে নয়, যে-সব স্কুলে কেবল ছেলেরা পড়ে বা যে-সব স্কুলে পড়ে শুধু মেয়েরা, দু’ধরনের প্রতিষ্ঠানেই পড়ুয়াদের নিরাপত্তার দিকটা দেখতে হবে বিশেষ ভাবে। কয়েক মাস আগে কলকাতার একটি স্কুলে কয়েক জন ছাত্রীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। হার্ট বলেন, ‘‘ছেলেদের স্কুল হোক বা মেয়েদের, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সিসি ক্যামেরা লাগানো বাধ্যতামূলক করা দরকার। স্কুলের শৌচালয়ের সামনে অবশ্যই আয়া রাখতে হবে।’’
পার্ক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের অধ্যক্ষা ফ্রান্সিস গোমসের মতে, ‘‘নীতিপাঠ ও নীতিকথার বই দিতে হবে পড়ুয়াদের। হিন্দু, মুসলিম-সহ সব সম্প্রদায়েরই নীতিকথার নানা ধরনের বই রয়েছে। সেই সব বই মানুষের চরিত্র গঠনে সাহায্য করে। পড়ুয়াদের পড়তে দিতে হবে ওই সব বই।’’
আলোচনায় যোগ দেওয়া অধ্যক্ষদের বক্তব্য, স্কুলের উপরে ভরসা করে অভিভাবকেরা কয়েক ঘণ্টার জন্য ছেলেমেয়েদের ছেড়ে দেন। তাই পড়ুয়াদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তায় স্কুলেরই উপরে। এক অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘সপ্তম থেকে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মধ্যে যৌনতা নিয়ে কৌতূহল থাকে। তাদের মধ্যে নানা ধরনের ভুল ধারণা তৈরি হয়। সেখান থেকে ওদের অনেকে অনেক সময় ভুল কাজ করে ফেলে। পড়ুয়াদের সঙ্গে যৌনতা সম্পর্কে যতটা সম্ভব খোলাখুলি আলোচনা করলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়।’’
আইসিএসই স্কুলগুলির সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের কাউন্সিল একটি গাইডলাইন বা নির্দেশিকা তৈরি করেছে। তাতে স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ের কথা বলা আছে। বেশির ভাগ স্কুলই সেগুলো মেনে চলে। তবু স্কুলে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ শোনা যায়। শিক্ষকদের এই বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy