টানা ২৩ দিন জেরার পরে অবশেষে আইএস যোগের অভিযোগে এ রাজ্যের পলিটেকনিক ছাত্র আসিক আহমেদ ওরফে রাজাকে গ্রেফতার করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বৃহস্পতিবার দিল্লির পাটিয়ালা হাউসের বিশেষ আদালত আসিককে ৫ দিনের জন্য এনআইএ হেফাজতে পাঠিয়েছে।
এনআইএ-র দাবি— জেরায় তথ্য মিলেছে, পশ্চিমবঙ্গে আইএস জঙ্গিদের ঘাঁটি তৈরির চেষ্টা করছিলেন আসিক। এ দেশের আইএস মডিউলের দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েক জনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখতেন তিনি। জেরায় এবং বয়ানে এ সব কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বসে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করা হল। এর আগে কৈখালির বাসিন্দা মেহদি মসরুর বিশ্বাসকে আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল বেঙ্গালুরু পুলিশ। তবে তিনি কর্নাটকে বসে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে আইএস জঙ্গিদের হয়ে প্রচার করছিলেন।
এনআইএ সূত্রের দাবি, সাইবার মাধ্যমে আইএস-এর প্রচার ও ক্যাডার নিয়োগের দায়িত্বে থাকা
সফি আরমরের ঘনিষ্ঠ শাগরেদ মুদাব্বির শেখের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল আসিকের। আইএস জঙ্গি হিসেবে ধৃত মহম্মদ নাফিস খানের সঙ্গেও আসিকের যোগাযোগ ছিল। আসিক রীতিমতো জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর ছকও কষেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে।
হুগলির ধনেখালির বাসিন্দা আসিক বর্ধমানের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজে পড়তেন। কাঁকসা গোপালপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়ি থেকে তাঁকে পাকড়াও করে এনআইএ। প্রথমে সল্টলেকের এনআইএ দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের পর আসিককে দিল্লিতে এনআইএ-র সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এনআইএ-র ডিজি শরদ কুমার নিজেও তাঁকে জেরা করেন। এনআইএ সূত্রের খবর, জেরায় সহযোগিতাই করছেন আসিক। খারাপ পথে পা বাড়িয়েছিলেন বুঝতে পেরে মানসিক ভাবে
ভেঙেও পড়েছেন।
এনআইএ-র এক অফিসার জানান, আসিকের পরিবারও ঘটনায় যথেষ্ট লজ্জিত। তাঁকে পাকড়াও করার পর সল্টলেকে এনআইএ-র অফিসে তাঁর বাবা বলেন, ‘‘স্যার আমায় একটা লাঠি দিন। আপনাদের সামনেই ওকে আমি পিটিয়ে মারব!’’ শেষমেশ তাঁকে নিরস্ত করে ফেরত পাঠানো হয়।
তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, এ রাজ্যে আইএস-এর কাজকর্ম শুরু করতে চেয়েছিলেন আসিক। কী রকম? এনআইএ-র এক কর্তা বলেন, এক তরুণীকে পছন্দ করতেন আসিক। ঘটনার কথা জানতে পেরে তরুণীর পরিজনেরা আসিককে ধরে মারধর করে। এর পরেই আসিক ওই তরুণীর বাবার দোকানের কাছে থাকা একটি জায়গার ছবি দিয়ে তাঁর নেতাদের কাছে জানতে চান, সেখানে হামলা চালানো হবে কি না? সেই প্রস্তাবে সায় না-দিয়ে আইএস নেতারা আসিককে বলেছিল, ‘‘ব্যক্তিগত আবেগ সরিয়ে রেখে বড় বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে তাঁকে।’’ এনআইএ জানতে পেরেছে, পরবর্তী কালে আসিক হুগলিরই কিছু এলাকায় হামলার ছক কষেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy