তৃণমূলের একাধিপত্যের মধ্যেও রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় রুখে দাঁড়িয়েছিল বিরোধীরা। এক প্রকার লড়াই করেই মনোনয়ন দিয়েছিল তারা। ভোটের দিনেও কোথাও কোথাও বেধেছিল সংঘর্ষ। গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলপ্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, প্রতিরোধের ওই এলাকাগুলিতে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি বিরোধীরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে পোলেরহাটের পঞ্চায়েতে হাইকোর্টের নির্দেশে জমিরক্ষা কমিটির তরফে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছিল হোয়াট্সঅ্যাপে। ওই কমিটির ৫ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ভোটের দিন বুথের সামনে আমডাঙার পাঁচপোঁতায় বোমাবাজিতে খুন হন সিপিএম কর্মী তইবুর গায়েন নামে এক যুবক। পাঁচপোঁতার ওই বুথটি-সহ চণ্ডীগর গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূল জিতেছে। আমডাঙা পঞ্চায়েত সমিতিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু আমডাঙার ভালুকাতে বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘর্যে মার খায় পুলিশও। ওই এলাকায় মরিচা পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে গিয়েছে। ভোটে বাগদার আষাঢু গ্রাম পঞ্চায়েতের আমডোব এলাকায় গনপিটুনি দেওয়া হয় ১০ তৃণমূল কর্মীকে। আমডোবের দু’টি আসনেই তৃণমূলকে হারিয়ে জিতেছে সিপিএম। আষাঢু গ্রাম পঞ্চায়েত অবশ্য শাসকের দখলেই রয়েছে।
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতে ভোটের দিন বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ওঠে। তির-ধনুক নিয়ে রুখে দাঁড়ান সিপিএমের কর্মীরা। ওই পঞ্চায়েতে ৫টি আসনের মধ্যে চারটিতেই জিতেছে সিপিএম। একটি জিতেছে তৃণমূল। একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও জিতেছে সিপিএম। সোমবার পুরুলিয়ার নীলডি হাইস্কুলের বুথে ঢুকে বোমা, গুলি ছুড়েছিল বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হয় এক যুবক। এর পরেই বিজেপি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সেখানে পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে ৫টিতে জিতেছে বিজেপি। তৃণমূল বুথ দখলের চেষ্টা করলে বাঁকুড়ার জগদল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়ায়। তৃণমূল কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানে পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে ৮টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। বীরভূমের তৃণমূলের দাপট এড়িয়েও মল্লারপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি।
বাগনানে দুষ্কৃতীরা বুথে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যালট বাক্স তুলে জলে ফেলে দিয়েছিল। সেখানে পুনর্নির্বাচন হয়। পুনর্নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছে। উলুবেড়িয়ার ১ ব্লকের কালীনগর পূর্ব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’টি বুথেও দুষ্কৃতীরা ভোটকর্মীদের মারধর করে ব্যালট বাক্স তুলে পুকুরে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। সেখানে পুনর্নির্বাচনে কড়া বেশিরভাগ ভোটই গিয়েছে তৃণমূলের দিকে। বিরোধীরা কার্যত ভোটই পায়নি। হাওড়া জেলায় মোট ৩৮টি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের ফলে দেখা যায় একই ফল।
এরই মধ্যে আবার রাজারহাটে সেঞ্চুরি করেছে তৃণমূল। রাজারহাট ব্লকে মোট পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৫টি আসনের মধ্যে তারা পেয়েছে ১০৩টি। গত বার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল পেয়েছিল ৭৬টি আসন। অন্য দিকে, সিপিএম গত বার ২৬টি আসন পেয়েছিল, সেখানে এ বার তারা পেয়েছে দু’টি। কংগ্রেস পেয়েছে একটি আসন। রাজারহাটের সবকটি পঞ্চায়েত সমিতিই দখল করেছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy