যাত্রা শুরুর অপেক্ষায়। শনিবার কারখানা চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন চালকদের সুবিধার জন্য বায়ো-টয়লেটযুক্ত দু’টি রেল ইঞ্জিন তৈরির কথা জানানো হয়েছিল গত আর্থিক বর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেটে। এই ধরনের শৌচাগার-সহ আরও বেশ কিছু সুবিধাযুক্ত ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করল চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস।
সম্প্রতি এমনই একটি ইঞ্জিনের উদ্বোধন করেন চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার জিএম ভিপি পাঠক। তাঁর দাবি, ‘‘এই ইঞ্জিনে এমন পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রাখা হয়েছে, যা ভারতবর্ষের কোনও কারখানা অতীতে করতে পারেনি।’’ কী কী বৈশিষ্ট্য? শনিবার সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ জানান, প্রতিটি ইঞ্জিনে চালকদের ব্যবহারের জন্য দু’টি করে বায়ো-টয়লেট বসানো হয়েছে। তা ছাড়া, প্রতিটি ইঞ্জিনে চালকদের কেবিনে ‘ভয়েস-ভিডিও রেকর্ডিং’-এর ব্যবস্থা থাকছে। তাতে সংশ্লিষ্ট চালকের গতিবিধি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে রেকর্ডিং হয়ে থাকবে। এর ফলে, কোথাও কোনও দুর্ঘটনা বা বিপত্তি ঘটলে চালকের কী ভূমিকা রয়েছে, তা জানা যাবে সহজেই। চালকের কেবিনে ওয়াইফাই সুবিধাও থাকছে। ফলে ট্রেন চালানোর সময় যে কোনও পরিস্থিতিতে চালকেরা সহজেই ট্রেনের গার্ডদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রেও সুবিধা মিলবে এই ইঞ্জিনে, দাবি কারখানার আধিকারিকদের। দ্রুত গতিতে নানা স্টেশন পেরনোর সময় ‘কেবিনম্যান’দের সঙ্গে সিগন্যাল বিনিময় করতে ইঞ্জিনের মাথায় লাল-নীল আলো লাগানো হয়েছে। চালকের হাতের কাছে এই আলোর স্যুইচ থাকবে। তিনি কেবিনের ভিতর থেকেই স্যুইচ চেপে সিগন্যাল বিনিময় করতে পারবেন। ফলে এখনকার মতো চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের জানলা থেকে মুখ বের করে স্টেশনের কেবিনম্যানদের আলো বা ঝাণ্ডা দেখাতে হবে না। তা ছাড়া ইঞ্জিনগুলিতে এমন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে, যার দ্বারা প্রয়োজনে দু’টি ইঞ্জিনকে একসঙ্গে জুড়ে অশ্বক্ষমতা বাড়িয়ে এক জন চালকই ট্রেন চালাতে পারবেন।
ইঞ্জিনগুলি দেখতে সম্প্রতি কারখানায় এসেছিলেন রেল বোর্ডের সদস্য ঘনশ্যাম। মন্তারবাবু জানান, ইতিমধ্যে এমন প্রায় ২২টি ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে। ছ’হাজার অশ্বক্ষমতাসম্পন্ন এই ইঞ্জিন তৈরির খরচ পড়ছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা।
তবে রেল সূত্রে জানা যায়, এগুলি ‘ডব্লিউএজি নাইন সিরিজ’-এর ইঞ্জিন। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে সাউথ-সেন্ট্রাল রেলওয়েতে এ ধরনের একটি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। পরে সেগুলি কী রকম চলছে, তা খতিয়ে দেখে এমন ইঞ্জিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে রেলকর্তাদের একাংশের অভিজ্ঞতা, শৌচাগার-সহ ইঞ্জিনের বেশ কিছু প্রক্রিয়াগত সমস্যা রয়েছে। তাঁদের দাবি, সাধারণভাবে শৌচাগার থাকা ইঞ্জিনগুলি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। তবে এই ধরনের ইঞ্জিনগুলির ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যা হবে না বলেই দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের।
(সহ প্রতিবেদন: ফিরোজ ইসলাম)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy