শোকপ্রস্তাব শেষ করে বিধানসভার অধিবেশন তখন সবে মুলতবি হয়েছে। অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরোনোর আগে বিরোধী দলনেতার দিকে এগিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। শরীর কেমন আছে এখন? ভুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে কেন? খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম করছেন? মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন শুনে পাল্টা সৌজন্য দেখালেন বিরোধী দলনেতাও। মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, রোগা হয়ে যাচ্ছ কেন? শরীরটা খারাপ দেখাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে এখন অ-বিজেপি শক্তির সার্বিক ঐক্যের বাতাবরণ চলছে। সদ্যই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে কথা বলে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় কুশল সমাচার নেওয়ার খাতিরে শুক্রবার কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দিকে মুখ্যমন্ত্রীর এগিয়ে যাওয়াকে তাই সূক্ষ্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসাবেই দেখতে চাইছেন অনেকে। শাসক ও বিরোধী শিবির অবশ্য এ দিনের আলাপচারিতাকে নিখাদ সৌজন্য বলেই জানিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের সময়ে বিরোধী দলনেতার পাশেই ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকার। সুযোগ পেয়ে তিনি অনুযোগের সুরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘মান্নানদা’ (আব্দুল মান্নান) সদর স্ট্রিটের একটা রেস্তোরাঁর খুব ভক্ত। বিরিয়ানি হোক বা চাইনিজ, কেউ খেতে চাইলে মান্নান না বলেছেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই! বিরোধী দলনেতা অবশ্য সহাস্যই দাবি করেছেন, পেসমেকার বসানোর পরে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে তিনি এখন অনেক সতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী আবার পাশে দাঁড়ানো বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর হাত ধরে সাক্ষী মানার ঢঙে বলেন, এই তো ডাক্তার আছে! বিরোধী দলনেতার ভুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে কি না, তিনিই বলুন। সুজনবাবু যদিও ডাক্তার নন।
পিএইচডি আছে বলে নামের আগে ‘ডঃ’ থাকে। সুযোগ বুঝে সুজনবাবু পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখিয়ে বলেন, উনিও তো আছেন। প্রসঙ্গত, পার্থবাবুও ডক্টরেট। এই অবসরে ‘কাজ আছে, আমি আসছি’ বলে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন বিরোধী নেতা।
কক্ষ ছাড়ার আগে কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজকের বিয়ের উপহার কেনার জন্য অপূর্বের হাতে দু’হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভার অলিন্দে অন্য এক টুকরো সৌজন্যের ছবিও ধরা পড়েছে এ দিন। পরিষদীয় দলের বৈঠক করতে বিধানসভায় এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দলত্যাগী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে অধীরবাবু জানতে চেয়েছেন, তিনি কেমন আছেন? সেই সঙ্গেই বলেছেন, মানসবাবুর সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। হেসে মানসবাবু অবশ্য দ্রুতই সিঁড়ি বেয়ে উঠে গিয়েছেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy