Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জোরদার আন্দোলন চেয়ে ডাক অধীরের

ওঁদের কেউ, টেলিফোনে শুনছেন— দলবদল করলে মোটা অঙ্কের নজরানার টোপ। কারও অভিযোগ, সে ডাকে সাড়া না দিলে দেখছেন, ‘মিথ্যে মামলায়’ ফাঁসিয়ে দেওয়ার চোখরাঙানি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২৯
Share: Save:

ওঁদের কেউ, টেলিফোনে শুনছেন— দলবদল করলে মোটা অঙ্কের নজরানার টোপ। কারও অভিযোগ, সে ডাকে সাড়া না দিলে দেখছেন, ‘মিথ্যে মামলায়’ ফাঁসিয়ে দেওয়ার চোখরাঙানি।

কংগ্রেসের সেই সব ‘ভুক্তভোগী’ জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই এ বার মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক এলাকা পর্যন্ত ‘মানুষের দরবারে’ যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করলেন অধীর চৌধুরী। জেলার কংগ্রেস নেতাদের চাঙ্গা করতে মঙ্গলবার তাঁদের নিয়ে এক প্রস্ত বৈঠক করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বুধবার ফের বৈঠক করেন জেলার কংগ্রেস বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে। মুর্শিদাবাদের বাম বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্যদেরও সেখানে ডেকেছিলেন অধীর। ওই বৈঠকেই অধীর এ দিন বলেন, ‘‘মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রেখেছে। তাই তৃণমূলের ক্রীতদাস হতে যাবেন না। ওঁদের সমস্ত প্রলোভন ও শাসানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। অধীর চৌধুরী আপনাদের পাশে থাকবে, আন্দোলন করবে, গুলি খেতে হয় খাবে, কিন্তু পিছিয়ে আসবে না।’’ পরে অধীর আরও বলেন, ‘‘দলবদলের জন্য ওঁদের (জনপ্রতিনিধি) উপরে কী ভাবে চাপ দিচ্ছে তৃণমূল, তা জেলার সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে ওঁদের নিয়েই এ বার জেলার গাঁ-গঞ্জ ঘুরব। ওঁদের মুখেই মানুষ শুনবেন তৃণমূলের বেচাকেনার কাহিনি।’’

অধীরের এই আন্দোলনকে অবশ্য ‘নিছকই নাটক’ বলছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘জেলা কংগ্রেসে এখন বালির বাঁধ। অধীরের ধারনাও নেই কংগ্রেসের
কত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতে তৈরি হয়ে রয়েছেন!’’

পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়াটা টের পাচ্ছেন অধীরও। কিন্তু কী ভাবে ধস ঠেকাবেন তিনি? জেলার নেতাদের মতে, বাম জমানাতেও কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। পঞ্চায়েতে তখন বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে পর্যন্ত বাধা দেওয়া হত। কিন্তু এ ভাবে টাকার লোভ দেখিয়ে জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা ছিল না। সূত্রের মতে, এ দিনের বৈঠকে জেলা কংগ্রেসের একাধিক নেতা অধীরকে প্রস্তাব দেন, মোকাবিলায় জঙ্গি আন্দোলনে নামুক দল। পরে তা নিয়ে অধীরকে প্রশ্নও করেন সাংবাদিকরা। কিন্তু অধীর বলেন, জঙ্গি আন্দোলন বলতে কী বোঝায়? তৃণমূলের স্বৈরতন্ত্রের মোকাবিলা করতে গিয়ে তো মাওবাদী হয়ে যেতে পারি না। হাতে এ কে ৪৭-ও তুলে নিতে পারি না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই আন্দোলন করব। জেলার প্রতিটি ব্লকে, পঞ্চায়েতে মানুষের কাছে গিয়ে বলব কীভাবে তাঁদের ভোটটাও (স্বাধীন মত) লুঠের টাকায় কিনে নিতে চাইছে তৃণমূল।

গত কাল অধীরের বৈঠকে কংগ্রেসের তিন বিধায়ক গরহাজির ছিলেন। তা নিয়ে জল্পনার পর ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হক ছাড়া জেলার সব কংগ্রেস বিধায়ককে বুধবারের বৈঠকে হাজির করান অধীর। মইনুল ছিলেন দিল্লিতে। সেখান থেকে মইনুলও ফোনে জানান, ‘‘কংগ্রেসে ছিলাম, কংগ্রেসেই থাকব।’’ শুধু বিধায়করা নন, এ দিনের বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের কংগ্রেস সদস্য সাবিনা ইয়াসমিনও। যিনি কংগ্রেস ছেড়ে তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে কদিন আগে তৃণমূল দলীয় তরফে দাবি করেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adhir Ranjan Chowdhury Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE