Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Congress

শাহের পদত্যাগ চেয়ে পথে অধীর-সোমেন

মিছিল শেষে এ দিন ধর্মতলার মোড়ে কিছু ক্ষণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে শামিল হন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা।

প্রতিবাদ: দিল্লিতে হিংসার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মিছিল। রয়েছেন অধীর চৌধুরী এবং সোমেন মিত্র। শুক্রবার এস এন ব্যানার্জি রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ

প্রতিবাদ: দিল্লিতে হিংসার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মিছিল। রয়েছেন অধীর চৌধুরী এবং সোমেন মিত্র। শুক্রবার এস এন ব্যানার্জি রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০১
Share: Save:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের ঠিক আগেই তাঁর ইস্তফার দাবিতে কলকাতায় পথে নামল কংগ্রেস। শাহ এই শহরে সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে থাকাকালীন কাল, রবিবার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে নানা সংগঠন। তার পরের দিন, সোমবারই আবার কলকাতায় যৌথ ভাবে শাহ-বিরোধী মিছিল করবে বাম ও কংগ্রেস।

রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুক্রবার ধর্মতলা পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেসের মিছিল থেকে দাবি তোলা হয়েছে ‘দিল্লিতে দাঙ্গা ও রক্তপাতের কলঙ্ক মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করুন অমিত শাহ’। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র একসঙ্গেই ছিলেন মিছিলে। বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নীতি এবং তৃণমূলের ‘দ্বিচারিতা’কে একই সঙ্গে নিশানা করেছেন তাঁরা। অধীরবাবুর কথায়, ‘‘দিল্লিতে আগুন জ্বলছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয়। শাহ প্রথমে আমদাবাদে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত ছিলেন আর এখন বিরোধীদের দোষ দিচ্ছেন! আবার তাঁর সঙ্গে ভুবনেশ্বরে বৈঠক করতে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কয়লার সেস দাবি করার এটা সময় হল? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে বৈঠক বয়কট করতে পারতেন না?’’ সোমেনবাবুরও বক্তব্য, ‘‘এক জন খুনির সঙ্গে বৈঠক, মধ্যাহ্নভোজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী! নীতি আয়োগ-সহ কত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যান না। কিন্তু দিল্লি, কলকাতা হোক বা ভুবনেশ্বর— মোদী, শাহের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করতে চান কেন?’’

একই সুর বামেদেরও। শাহের জন্য শহিদ মিনার ময়দানে সভা এবং মাইক ব্যবহারেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এ দিন উদ্বাস্তু সমাবেশের অনুমতি পায়নি বামেরা। এন্টালির রামলীলা ময়দানে সভা থেকে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদী অসমে যেতে ভরসা না পেলেও বাংলায় নিরাপত্তার মোড়ক পান। এ বার দিল্লিতে গুজরাত মডেলের আমদানি ঘটিয়ে, হাতে রক্ত মেখে শাহ আসছেন কলকাতায় বক্তৃতা করতে! রাজ্য সরকার স্বাগত জানালেও বাংলার মানুষ এই অবাঞ্ছিত অতিথির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হবেন।’’ শাহের সফরের দিন বামেরা যেমন ধর্মতলা ছাড়াও কলকাতার আরও ১০ জায়গায় বিক্ষোভ-জমায়েতের ডাক দিয়েছে, প্রদেশ কংগ্রেসও তাদের সব শাখা সংগঠনকে ধর্মতলায় প্রতিবাদে জড়ো হতে বলেছে।

হাজরা থেকে মিছিলে অধীর মান্নান।—নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের মন্ত্রী এবং জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেছেন, ‘‘প্রথমে সিএএ এবং তার পরে দিল্লির ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যা ভূমিকা, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শান্তিপূর্ণ ভাবেই রবিবার মৌলালি থেকে মিছিল করে আমাদের সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা ধর্মতলায় যাবেন এবং অবস্থান করবেন।’’ দিল্লি-কাণ্ডে সাধারণ মানুষের স্বজন হারানোর দায় বিজেপিকেই নিতে হবে বলে দায়ী করে ১ তারিখ রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে এসইউসি।

মিছিল শেষে এ দিন ধর্মতলার মোড়ে কিছু ক্ষণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে শামিল হন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। মিছিলে পা মেলান দেবপ্রসাদ রায়, অসিত মিত্র, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার, মায়া ঘোষ, সুব্রতা দত্তেরা। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের মিছিলে দেখা যায়নি বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। পরে সন্ধ্যায় তিনি অধীরবাবুর সঙ্গে হাজরা থেকে প্রদীপ প্রসাদের ডাকা মিছিলে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।

বিরোধীদের এই তৎপরতাকে ফের কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএম ক্রমশ উঠে যাচ্ছে! আর একটা নির্বাচন হলেই এরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। মোদী, শাহেরা এলে বোঝা যায় যে, এরা আছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE