Advertisement
০৭ মে ২০২৪

অগ্নিকাণ্ডে ভয়ঙ্কর মৃত্যুর সময়েও হাতে হাত ধরে বসে নবদম্পতি

মাত্র দেড় মাস হল বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে সেই সুখ কপালে সইল না। নিজের বাড়িতেই ভয়ঙ্কর আগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল নব-দম্পতির। ৩০ বছরের শঙ্কর দাশ ও ২৬ বছরের অর্পিতা দাশ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শালকিয়া অঞ্চলের ১২ নং ওয়ার্ডে।

দুর্ঘটনায় মৃত দম্পতি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

দুর্ঘটনায় মৃত দম্পতি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৬ ১২:৩৫
Share: Save:

মাত্র দেড় মাস হল বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে সেই সুখ কপালে সইল না। নিজের বাড়িতেই ভয়ঙ্কর আগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল নব-দম্পতির। ৩০ বছরের শঙ্কর দাশ ও ২৬ বছরের অর্পিতা দাশ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শালকিয়া অঞ্চলের ১২ নং ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের ৪৪ নং ত্রিপুরা রায় লেনের তিন তলা বাড়িটির পরিবেশ সকাল থেকেই থমথমে। গতকালও যে বাড়ি স্বাভাবিক নিয়মেই হেসে-খেলে চলছিল আজ সেই বাড়ির সকলে শোকে পাথর। গোটা পাড়াই যেন থমথম করছে।

আজ, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৫টা নাগাদ হঠাৎই বিকট বিস্ফোরণের শব্দে জেগে যায় গোটা পাড়া। পাশের বাড়িতে থাকেন রমেশ সাতঁরা নামের এক ভদ্রলোক। শব্দ পেয়েই ছুটে আসেন তিনি। ছুটে আসেন পাড়ার সকলেই। তিন তলা বাড়িটির একে বারে ওপরের তলায় থাকতেন ওই দম্পতি। আর নীচের তলায় থাকেন শঙ্করের বাবা-মা। মাণিক দাশ ও জবা দাশ। বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে পাড়ার সকলে এসে দেখেন তিনতলায় শঙ্কর ও অর্পিতার বেডরুম এবং বেডরুম লাগোয়া ড্রয়িংরুম থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আর প্রচন্ড ধোঁয়াও বের হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করেও প্রচণ্ড আগুনের হলকার সামনে ব্যার্থ হয়। এরপরই খবর দেওয়া হয় দমকলে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। কিন্তু বাড়িটির সামনের গলি সরু থাকায় বাড়ির সামনে আসতে পারে না দমকলের ইঞ্জিন। রাস্তার কল থেকে রিলে করে জল এনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন তলার দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকে দমকল। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, ড্রয়িংরুমের সমস্ত আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বেডরুমের অবস্থাও তথৈবচ। বেডরুমের মেঝেতে সম্পূর্ণ দগ্ধ অবস্থায় হাত ধরাধরি করে বসে আছেন মৃত দম্পতি।

এরপরেই প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে এমন ভয়ঙ্কর আগুন লাগলো? কিসের থেকেই বা এমন বিকট বিস্ফোরণ হল? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত এসি থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে। এই পরিবারের প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। তাই তিনতলার ড্রয়িংরুমে প্রচুর দাহ্য পদার্থ রয়েছে। রয়েছে নানান ধরণের রাসায়নিকও। আর সেই কারণেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। ওই দম্পতির মৃতদেহ হাওড়া পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছিলেন এলাকার কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক এবং তৃণমূল প্রার্থী লক্ষ্মীরতন শুক্না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire salkia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE