ছবি এপি।
আবেদনকারীর সংখ্যা ন’হাজারের বেশি। তার মধ্যে ৯০ শতাংশই ভুয়ো!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সংশোধিত তালিকা তৈরি করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হাওড়ার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের। যাঁদের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদেরই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কিন্তু ব্লক প্রশাসনের কর্তারা দেখেছেন, যাঁর বাড়ির এক-আধটা টালি ভেঙেছে, তিনিও যেমন আবেদন করেছেন, তেমনই যাঁর পাকা দোতলা বাড়ির সামান্য ক্ষতি হয়েছে, তিনিও আবেদনকারী!
আজ, বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের কাছে নয়া তালিকা জমা দেওয়ার কথা ব্লক প্রশাসনের। বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘আবেদনের নিরিখে সরেজমিন তদন্ত করেছিল টাস্ক ফোর্স। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নামই তালিকায় থাকবে। তা ১০-১৫ শতাংশ।’’
এই জেলায় ওই তালিকা নিয়ে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণেরর প্রথম অভিযোগ ওঠে সাঁকরাইলে। এ জন্য সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক দলীয় সদস্যকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। পাঁচলা পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ মুজিবর রহমান অভিযোগ তোলেন, তাঁর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ৮০ শতাংশ নামই ভুয়ো। আরও কয়েকটি এলাকা থেকেও একই অভিযোগ উঠতে থাকে।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন বন্দর-কর্মীর অ্যাকাউন্টেও টাকা
এ সবের জেরেই জেলাশাসক প্রতিটি ব্লকে বিডিও-র নেতৃত্বে তালিকা যাচাইয়ে টাস্ক ফোর্স গড়েছেন। ২৫ জুন রাজ্যের মুখ্যসচিবও ব্লক প্রশাসনগুলিকে কমিটি তৈরি করে ২ জুলাইয়ের মধ্যে ত্রুটিহীন তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়।
উলুবেড়িয়া-১ ব্লকে পঞ্চায়েত ৯টি। প্রথম বার তালিকায় সব ক’টি পঞ্চায়েত মিলিয়ে তালিকায় ২২৫০ জনের নাম উঠেছিল বলে সূত্রের খবর। তবে, প্রথম বার তালিকা করেছিল পঞ্চায়েত। এ বার ব্লক প্রশাসনে ‘ক্ষতিগ্রস্তেরা’ সরাসরি আবেদন করেছেন। যাতে ভুয়ো আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
যেমন, চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের জানবার গ্রামের প্রশান্ত ভৌমিক এক আবেদনকারী। অথচ, তাঁর ঝাঁ-চকচকে দোতলা বাড়ি। তিনি কেন আবেদন করেছেন? প্রশান্ত বৃহস্পতিবার দেখালেন, তাঁর বাড়ি লাগোয়া ছোট চালার কিছু টালি ভেঙেছে।
আরও পড়ুন: ক্ষতিপূরণেও কাটমানি!
জয়নগর গ্রামের অমরেশ ঘোষ উলুবেড়িয়া থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর দোতলা পাকা বাড়ি। তাঁর বাড়ির চৌহদ্দিতে থাকা ছোট রান্নাঘরটির উপরে গাছ পড়ে কয়েকটি টালি ভেঙেছে বলে তিনি মায়ের নামে আবেদন করেছেন। অমরেশ বলেন, ‘‘সকলেই আবেদন করছেন, তাই মায়ের নাম দিয়ে করলাম।’’ চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য শঙ্কর মাইতিরও ক্ষতি সামান্য। তিনিও আবেদনকারী। তাঁর কথায়, ‘‘লকডাউনে আর্থিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছি। তাই আবেদন করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy