প্রতীকী ছবি।
কলম্বাস ‘কেস’!
এই শব্দ দু’টোই মুখে মুখে ঘুরছে মুর্শিদাবাদের সুতি ও রঘুনাথগঞ্জে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ‘‘এত দিন শুনেছি, পুলিশ নাকি ছাইয়েরও দড়ি পাকাতে পারে। আজ কলম্বাসের ভূমিকাতেও দেখলাম। ম্যাপ, স্কেল নিয়ে বাবুদের মাপজোকের সে কী বাহার! শুধু দূরবিনটাই যা ছিল না।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে আহিরণের সিআইএসএফ ক্যাম্পের জঙ্গলে এক যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখে রাখাল বালকেরা। খবর যায় আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে। তারা জানিয়ে দেয়, এ ‘কেস’ তাদের নয়। কারণ, এলাকা রঘুনাথগঞ্জ থানার মধ্যে পড়ছে।
‘হতেই পারে না’ বলে কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। তারাও গোঁ ধরে, এলাকা কোনও ভাবেই তাদের থানার মধ্যে পড়ছে না। এ ‘কেস’ সুতির থানার।
দেহে তখন পচন ধরেছে। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। এ দিকে, দুই থানার পুলিশ অনড়। শেষ পর্যন্ত আসতে হল সুতি ও রঘুনাথগঞ্জ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীদের। ঝুলি থেকে বেরোল ম্যাপ। ম্যাপে বসল স্কেল। ঘণ্টাখানেক মাপজোকের পরে তাঁরা জানিয়ে দিলেন, এলাকা পড়ছে রঘুনাথগঞ্জ থানার মধ্যে। এ বারে স্কেল বসাল রঘুনাথগঞ্জের পুলিশ। তার পরে বেজার মুখে দেহ মর্গে পৌঁছে দিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে যান ফরাক্কার মমরেজপুরের বাসিন্দা সামিম শেখ (৪৫)। তাঁর খোঁজে বাড়ির লোকজন আহিরণ-সহ লাগোয়া এলাকায় পোস্টার সাঁটান। দেওয়া ছিল ফোন নম্বর। ফোন পেয়ে ছুটে আসেন বাড়ির লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে। রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক রণেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলছেন, ‘‘পুলিশের অনুরোধে এ ভাবে আগে কখনও জমি মাপতে হয়েছে বলে মনে পড়ছে না।’’
আহিরণ ফাঁড়ির ইনচার্জ শুভ্রজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জয়ীর হাসি হাসছেন, ‘‘প্রথমেই বলেছিলাম, এটা ওদের কেস।’’ কিন্তু দেহ ফেলে রেখে জমি জরিপ করতে বসা়টা ঠিক হল কি? মন্তব্য করতে চাননি
পুলিশ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy