—ফাইল চিত্র।
সিপিএম মনে করছে, বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তুলতে গেলে কংগ্রেসের হাত ধরা ছাড়া গত্যন্তর নেই। ফরওয়ার্ড ব্লকের মতো বাম শরিক দল বাংলায় তাদের সংগঠনের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য কংগ্রেস-সঙ্গে নারাজ। কিন্তু একই সঙ্গে তারা মনে করছে, কেন্দ্রে বিজেপিকে ফের সরকার গড়া থেকে নিরস্ত করতে ২০০৪ সালের মতো প্রয়োজনে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোটকে সমর্থন করতে হতেই পারে। এই রকম আপাত-বৈপরীত্য নিয়েই লোকসভা ভোটের কৌশল তৈরির আগে বামফ্রন্টের অন্দরে টানাপড়েনের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে।
কলকাতায় দলের অষ্টাদশ পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস সোমবার বলেছেন, বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর বাম ঐক্যই তাঁরা চান। যে কংগ্রেসের আর্থিক বা বিদেশ নীতির সঙ্গে বিজেপির কোনও ফারাক নেই, তাদের সহযোদ্ধা ভাবার কারণ নেই। তবে রাজ্যভিত্তিক পরিস্থিতি যে হেতু আলাদা, তাই সংশ্লিষ্ট রাজ্য নেতৃত্ব দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে নির্বাচনী কৌশল ঠিক করবেন। বাংলার ক্ষেত্রে তাঁরা যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চান না, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন দেবব্রতবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘যেখানে বামেদের কিছু শক্তি আছে, সেখানে সেটাই আরও সংহত করা হোক। আর যেখানে বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াইটা কংগ্রেসই লড়ছে, সেখানে আমাদের আলাদা কিছু করতে যাওয়ার দরকার নেই।’’ মুখে না বললেও ফ ব নেতৃত্বের আশঙ্কা, লোকসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হলে তাঁদের ভাগের আসন আবার কাটা পড়তে পারে!
একই দিনে দমদমে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সাধারণ সভায় দলের রাজ্য সম্পাদক ও পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বাম শরিকদের এই আপত্তির কথা উল্লেখ করেই প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে বামেদের জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই, সেখানে কি তাঁরা প্রার্থী দিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের সুবিধা করে দেবেন? সূর্যবাবুও মেনেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের নীতিগত ফারাক অবশ্যই আছে। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও নির্বাচনী জোট বা ফ্রন্টও সম্ভব নয়। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি মাথায় রেখে তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় প্রয়োজন মতো আসন ছাড়তে হবে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে। যার মধ্যে কংগ্রেসও আছে। তবে তার আগে কংগ্রেসকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। আর বামেরা কোথায় কী ভাবে সমঝোতা করবে, তা নিয়ে অবশ্যই বামফ্রন্টে আলোচনা হবে।
সূর্যবাবুদের উল্টো মতে থাকলেও দেবব্রতবাবু অবশ্য ২০০৪ সালের পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে কোনও সম্ভাবনা খারিজ করা যায় না। সেই ২০০৪ সালের পরিস্থিতিতে অভিন্ন কর্মসূচির ভিত্তিতে কংগ্রেসকে সমর্থন ঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। আবার তেমন পরিস্থিতি এলে ভেবে দেখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy