ভাঙড় ও কার্শিয়াঙে পিপিপি মডেলে মেডিক্যাল কলেজ তৈরিতে বিলম্ব নিয়ে এ বার উষ্মা প্রকাশ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম থেকে স্বাস্থ্য দফতর আছে তাঁর হাতেই। টাউন হলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বুধবারের বৈঠকে এই ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওই দু’টি মেডিক্যাল কলেজ গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয় টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের। মুখ্যমন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে সেই সংস্থার কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা তো মেডিক্যাল কলেজ করছেন না। প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ না-হলে ডাক্তার আসবে কোথা থেকে?!’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় সত্যমবাবু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।
ওই সংস্থার তরফে মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্বে থাকা গৌতম রায়চৌধুরীর সঙ্গে পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ভাঙড়ে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের জমি মাত্র ছ’মাস আগে আর কার্শিয়াঙের জমি আট মাস আগে আমাদের দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। মেডিক্যাল কলেজ তো আর ভোজবাজির মতো গড়ে ওঠে না। সময় লাগে।’’ সত্যমবাবুর দাদা গৌতমবাবুর দাবি, ‘‘কিছু লোক আমাদের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সব কিছু জানাব।’’
কিন্তু সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা ভুল তথ্য দেবেন কেন?
‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আলাদা স্নেহের চোখে দেখেন বলেই এই শত্রুতা। আমরা কখনও এমন কিছু করতে পারি না, যাতে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়,’’ বলেন গৌতমবাবু।
পিপিপি মডেলে মেডিক্যাল কলেজ গড়ার জন্য ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয় টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের। ঠিক ছিল, দু’বছরে কার্শিয়াং মেডিক্যাল কলেজ এবং পাঁচ বছরের মধ্যে ভাঙড় মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়ে যাবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব রাজেন্দ্র শুক্ল এ দিন আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘টেকনো ইন্ডিয়া (জমি দেওয়ার ব্যাপারে) ঠিক বলছে না। ২০১৬-র জানুয়ারিতে ওদের জমি দেওয়া হয়েছিল দুই জায়গাতেই। ওরা কাজে অস্বাভাবিক দেরি করছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সব খবর থাকে। তাই তিনি সরাসরি কথাটা বলেছেন ওদেরই।’’ প্রাক্তন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক জ্বালিয়েছেন ওঁরা (টেকনো ইন্ডিয়া)। দীর্ঘদিন অর্ধেক ভবন তৈরি করে আর মাটি কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল।’’
এই সমস্ত অভিযোগই অবশ্য অস্বীকার করেছেন সত্যমের অন্যতম কর্ণধার গৌতমবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘কার্শিয়াঙে ২০১৮ সালের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়ে যাবে। আর ভাঙড়ে মেডিক্যাল কলেজ চালু হবে ২০২১-এ। ওখানে হাসপাতাল অবশ্য চালু হবে আগামী বছরেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy