প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না-করায় দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের ৬টি শহর থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দিল বিমান মন্ত্রক। এখন কলকাতা থেকে দিনে গড়ে ৮-১০টি উড়ান দিল্লিতে আর ৪টি মুম্বই যাচ্ছে।
শনিবার বিকেলে দিল্লি থেকে কলকাতায় আসা নির্দেশে বলা হয়েছে ৬ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, নাগপুর ও পুণের সরাসরি উড়ান বন্ধ রাখা হবে। ইতিমধ্যেই এই রুটে যাতায়াতের জন্য বহু যাত্রী টিকিট কেটে রেখেছিলেন। এ দিনই উড়ান সংস্থাগুলিকে সেই সব উড়ান বাতিল করতে বলা হয়েছে। উড়ান সংস্থাগুলিকে নতুন করে আবার উড়ানসূচি বদল করতে হবে বলেও মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে।
বিমান মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই উড়ান চালু করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলবে। প্রথম দু-তিনদিন উড়ান পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পরে যাতে প্রধানত দিল্লি ও মুম্বই থেকে দিনে একটি করেও উড়ান চালানো যায়, তার জন্য রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হবে। তবে, এই ছটি শহর বাদ দিয়ে অন্য শহর থেকে কলকাতায় যেমন উড়ান চলছিল তেমনই চলবে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে এবং তা ভিন রাজ্য থেকে আসা মানুষদের থেকে বেশি ছড়াচ্ছে, এমনটাই মনে করছে রাজ্য সরকার। এই কারণ দেখিয়ে ৬ জুলাইয়ের পরে দুই সপ্তাহের জন্য কলকাতা থেকে দেশের আটটি শহরের উড়ান সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ করে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য। শুক্রবার দিল্লি থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ফোন করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়। কিন্তু, সেই আর্জি রাজ্য মানেনি। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, আটটি শহরের মধ্যে ইনদওর ও সুরাত থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান নেই। তাই, বাকি ছটি রাজ্য থেকে উড়ান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে।
দেশের বাকি শহরগুলি থেকে কলকাতায় সপ্তাহে একটি করে উড়ান চালানোর জন্য ওই চিঠিতেই কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছিল রাজ্য। কিন্তু, শনিবারে দিল্লি থেকে আসা নির্দেশে সেই বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।
উড়ান সংস্থাগুলির অভিযোগ, আচমকা কলকাতা থেকে ছটি শহরের উড়ান বন্ধ করে দিতে হলে পুরো উড়ানসূচি বদলে ফেলতে হবে। কারণ, সূচি অনুযায়ী একটি বিমান কলকাতা থেকে ভোরে দিল্লি গিয়ে আবার দিল্লি থেকে অন্য শহরে উড়ে যায়। এ ভাবে এক একটি বিমান সারা দিন দেশের বিভিন্ন শহরে উড়ে বেড়ায়। সেই অনুযায়ী পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ডিউটিও ঠিক করা থাকে।
এ বার যাত্রীরা তাদের টিকিটের পুরো টাকা ফেরত চাইবেন বলেও সংস্থাগুলির আশঙ্কা। এত নগদ টাকা ফেরত দেওয়া তাদের পক্ষে মুশকিল। উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, কলকাতা থেকে যদি ভুবনেশ্বরের উড়ান নিয়মিত চলে তা হলে যাঁর দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল, তিনি দিল্লি থেকে ভুবনেশ্বর ঘুরে কলকাতায় ফিরবেন। এর ফলে যাত্রীর খরচ বাড়বে। ইন্ডিগো রাতে জানিয়েছে, যাত্রী চাইলে অন্য রুটের টিকিট কাটতে পারেন। তবে টিকিট বাতিল করলে পুরো ভাড়া ফেরত পাবেন। সল্টলেকের বাসিন্দা, চক্ষু বিশেষজ্ঞ মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের জরুরি কাজে দিল্লি যাওয়ার কথা। পৌঁছনোর কথা ১৮ জুলাই। টিকিটও কাটা। এখন তাঁকে হয় অন্য শহর ঘুরে অথবা সড়কপথে দিল্লি যেতে হবে। মুম্বই থেকে কলকাতায় জরুরি কাজে আসার কথা ছিল সুজয় দত্তের। ৯ তারিখে আসা আর ১২ তারিখে ফেরার টিকিট ছিল তাঁর। উড়ান বাতিলে তিনি পুরো টাকা ফেরত পাবেন কি না, এখন সেটাই তাঁর কাছে বড় প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy