Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অবতরণের মুখে বিমানের সামনে হঠাৎ চলে এল ড্রোন, তার পর...

রবিবার বিকেলের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। কলেবরে ছোট বলে ড্রোনের অস্তিত্ব কলকাতার ‘অ্যাপ্রোচ রেডার’-এ ধরা পড়েনি বলে আপাতত জানা গিয়েছে। তবে ওই ড্রোন কারা নিয়ন্ত্রণ করছিল, তা সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।

এই ড্রোন ব্যবহার করে পুলিশ

এই ড্রোন ব্যবহার করে পুলিশ

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২০
Share: Save:

কলকাতায় যাত্রী নিয়ে নামার মুখে মায়ানমার এয়ারের বিমানের সামনে চলে এল ড্রোন। এক বার নয়, দু’বার। সেই ড্রোনের সঙ্গে বিমানের ধাক্কা লাগলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ওই এয়ারবাস ৩১৯ বিমানে ছিলেন ৮০ জন যাত্রী।

রবিবার বিকেলের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। কলেবরে ছোট বলে ড্রোনের অস্তিত্ব কলকাতার ‘অ্যাপ্রোচ রেডার’-এ ধরা পড়েনি বলে আপাতত জানা গিয়েছে। তবে ওই ড্রোন কারা নিয়ন্ত্রণ করছিল, তা সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।

বছর খানেক আগে কৈখালির দিক থেকে নামার সময়ে এক বিমানচালক একটি ‘বস্তু’ দেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে তা ড্রোন ছিল কি না, বোঝা যায়নি। রবিবার অবশ্য বিমানচালক নিজেই জানিয়েছেন, তিনি ড্রোন দেখতে পেয়েছেন।

সপ্তাহে দু’দিন— বৃহস্পতি ও রবিবার মায়ানমার এয়ারের বিমান কলকাতায় নামে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ। রবিবার বিরাটির দিক দিয়ে নামার আগেই এই বিপত্তি দেখা দেয়। বিমানচালক প্রথম বার যখন ড্রোন দেখতে পান, তখন তিনি কলকাতা থেকে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ছিলেন।
মাটি থেকে বিমানের উচ্চতা প্রায় ৯০০ ফুট। ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে নেমে আসছিল বিমান। সেই সময়ে সামনে একটি ড্রোন উড়তে দেখে মায়ানমারের বিমানচালক তা কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) জানান।

এর কয়েক মুহূর্ত পরে ওই বিমানচালক আবার বিমানের সামনে একটি ড্রোন উড়তে দেখেন। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সেই সময় বিমানটি কলকাতা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে। মাটি থেকে উচ্চতা ৩০০ ফুট। বিমানচালক বিষয়টি আবার এটিসি-কে জানান।

ছবি তোলার কাজে ব্যবহৃত ড্রোন। (ডান দিকে) খেলনা ড্রোন

একই ড্রোনকে কি দু’বার দেখলেন তিনি? সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বিমানবন্দরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথমবার দেখার পরে প্রায় তিন কিলোমিটার নেমে এসে দ্বিতীয়বার ড্রোন দেখেন পাইলট। এই সময়ে বিমানের যে গতি থাকে, কোনও ভাবেই ড্রোনের গতি তার বেশি হতে পারে না। ফলে, একই ড্রোন তিনি দেখেছেন বলে আপাতত মনে হচ্ছে না।’’

সাধারণত, বিমানবন্দরের আশপাশে ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ। বিশেষ ক্ষেত্রে বিমানমন্ত্রকের অনুমতি নিয়ে তা ওড়ানো যায়, এবং তা নির্দিষ্ট আকাশসীমায়। বিমানবন্দরের কর্তাদের মতে, সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনী, পুলিশ এক্ষেত্রে আগাম অনুমতি নেয়। তা কেউ নেয়নি। আর এই ড্রোন কোথা থেকে আসছে, তা এখনও জানা যায়নি।

কলকাতা বিমানবন্দরে এর আগে লেসার রশ্মি এবং পুজোর সময় ফানুস নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বিমানচালকেরা। খোঁজ করে দেখা গিয়েছিল, রাজারহাটের অনেক নাইট ক্লাব ও পার্টিতে শক্তিশালী লেসার রশ্মি ব্যবহার করা হয় এবং তা বিমানচালকদের সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্থানীয় পুলিশের হস্তক্ষেপে তা অনেকটা বন্ধ করা গিয়েছে। পুজোর সময়ে ইদানীং যথেচ্ছভাবে ফানুস ওড়ানো যে বিমানের ক্ষেত্রে বিপদ ডেকে আনতে পারে, সে বিষয়েও সচেতন করা হয়েছে স্থানীয়দের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drone Aeroplane Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE