Advertisement
১১ মে ২০২৪

বিজিবির আপত্তিতে থমকে কাজ

এমনিতেই চ্যাংরাবান্ধা বাজারের পূর্ব দিকে ধরলা নদীতে ভাঙন সমস্যা বাড়ছে। এর জেরে গত কয়েক বছরে মেখলিগঞ্জ ব্লকের ছটপুজোর সবচেয়ে বড় ঘাট এলাকাটিও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি, নদী অনেকটাই বসতি এলাকার দিকে এগিয়ে আসছে।

অসমাপ্ত: চ্যাংরাবান্ধার ছটঘাট। নিজস্ব চিত্র

অসমাপ্ত: চ্যাংরাবান্ধার ছটঘাট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চ্যাংরাবান্ধা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩২
Share: Save:

চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) আপত্তিতে থমকে থাকা ধরলা নদীতে ছটঘাট তৈরির কাজ ফের চালুর দাবি তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এমনিতেই চ্যাংরাবান্ধা বাজারের পূর্ব দিকে ধরলা নদীতে ভাঙন সমস্যা বাড়ছে। এর জেরে গত কয়েক বছরে মেখলিগঞ্জ ব্লকের ছটপুজোর সবচেয়ে বড় ঘাট এলাকাটিও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি, নদী অনেকটাই বসতি এলাকার দিকে এগিয়ে আসছে। সেই কারণে বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদ বছর তিনেক আগে সিমেন্ট-পাথর দিয়ে কংক্রিটের ঘাট তৈরির কাজ শুরু করে। কিন্তু একটি মাত্র সিঁড়ি তৈরির পরেই এই কাজ নিয়ে বিজিবি-র তরফে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়। যার জেরে কাজটিই থমকে যায়। এই ঘটনার পর সেচ দফতরের তরফে বাঁধ নির্মাণের যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, বিজিবি-র বাধার আশঙ্কায় সেই কাজও শুরু করা হয়নি বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

ঘাট তৈরির কাজ থমকে যাওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বিষয়টি নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এরপর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফে এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়। কিন্তু তিন বছর পরেও সেই সমস্যার সমাধান হয়নি। তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্দিষ্ট সময়ে ছটঘাটের কাজ শেষ না করার ফলে ওই প্রকল্পের টাকা ফেরতও চলে গিয়েছে। যার ফলেই ক্ষোভ আরও বেড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এমনকি, সম্প্রতি চ্যাংরাবান্ধা ও মেখলিগঞ্জ এলাকার উন্নয়ন নিয়ে পর্ষদের ডাকা বৈঠকেও বিষয়টি তোলেন স্থানীয়রা। ছটঘাটের কাজ শুরুর দাবি নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান। এ নিয়ে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘‘ওখানে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনের বিষয় রয়েছে। সেই কারণে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা পর সমস্যা মিটলেই কাজ শুরু করা হবে।’’ তবে পরেশ এ কথা বললেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেও অবশ্য মনে করছেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং বিদেশমন্ত্রক-সহ বিভিন্ন মহলের কাছে সমস্যাটি তুলে ধরলে দু’দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হতে পারে।

স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে এসে ছটঘাট তৈরির কাজ বন্ধ আছে জানতে পেরে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে বলেন। এরপর ব্লক এবং মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা ওই এলাকা পরিদর্শনও করেন। কিন্তু আজও থমকে থাকা সেই কাজ শুরু হয়নি। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অমিতকুমার ঠাকুর বলেন, ‘‘বর্তমানে শুখা মরসুম চলছে। এই সময় কাজ শুরু না হলে বর্ষায় এই কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা হোক।’’ এ নিয়ে মেখলিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিয়তি সরকার বলেন, ‘‘বিজিবি-র আপত্তিতে কাজটি থমকে থাকায় সত্যিই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত কাজ শুরুর বিষয়ে উদ্যোগী হোক চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BGB Border BSF Indo Bangladesh Border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE