ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়লেও শেষ পর্যন্ত তার সুপারিশ কবে আসবে, তা ঘোর অনিশ্চিত। পাশাপাশি, কোন ফর্মুলায় বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করবে বেতন কমিশন, তা নিয়েও ধোঁয়াশায় সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি।
সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ব্যান্ড-পে (বেসিক এবং মহার্ঘভাতার যোগফল) এবং গ্রেড-পে (গত বেতন কমিশনের ফলে বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ) মিলিয়ে এক জন সরকারি কর্মচারীর মূল বেতন নির্দিষ্ট হয়। নতুন বেতন কমিশন সেই মূল বেতনকে ২.৫৭ দিয়ে গুণ করে নতুন বেতন কাঠামো তৈরি করবে, এমনটাই চালু রীতি। সেই ফর্মুলাকেই এত দিন মান্যতা দিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় বা অতীতের বাম সরকার। কিন্তু এ বার একটি পৃথক ফরমুলা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে অর্থ দফতরের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে সংগঠনগুলির দাবি।
কী সেই ফর্মুলা? সংগঠনগুলির দাবি, ব্যান্ড পে-কে ২.৩৫ এবং গ্রেড পে-কে ১.৫ দিয়ে গুণ করে বেতন কাঠামো স্থির করার বিষয়ে দু’পক্ষের আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি ঠিকই, কিন্তু যদি শেষ পর্যন্ত নতুন ফর্মুলা প্রয়োগ করা হয়, তা হলে বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ অনেকটাই কম হবে বলে জানাচ্ছেন সংগঠনগুলির নেতারা।
কী ভাবে? উদাহরণ দিয়ে ওই নেতারা বলছেন, ধরা যাক এখন কোনও কর্মচারীর বেসিক পে ১০০ টাকা। ২০১৯-এর জানুয়ারিতে তাঁর মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ হবে ১২৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১২৫ টাকা। সব মিলিয়ে তাঁর ব্যান্ড পে ২২৫ টাকা। এ বার চতুর্থ বেতন কমিশনের আমলে যদি তাঁর মূল বেতন ৭০ টাকা থেকে থাকে, তা হলে পঞ্চম বেতন কমিশনে তাঁর ৩০ টাকা বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল। অতএব তাঁর গ্রেড পে ৩০ টাকা। এবং এখন তাঁর মূল বেতন (২২৫+৩০) ২৫৫ টাকা। চলতি ফর্মুলা অনুযায়ী এই বেতনকে ২.৫৭ দিয়ে গুণ করে ষষ্ঠ বেতন কমিশনে তাঁর বেসিক হওয়ার কথা ৬৫৫.৩৫ টাকা।
আরও পড়ুন: ৮২৮ কেরানি নিয়োগে অনুমোদন দিল পিএসসি
কিন্তু তাঁরা ব্যান্ড পে-কে ২.৩৫ দিয়ে গুণ করলে হবে ৫২৮.৭৫ টাকা এবং গ্রেড পে-কে ১.৫ দিয়ে গুণ করলে হবে ৪৫ টাকা। ফলে সব মিলিয়ে তাঁর বেসিক পে হবে ৫৭৩.৭৫ টাকা। যা চলতি ফর্মুলার থেকে অনেকটাই কম।
এক কর্মচারী নেতার বক্তব্য, ‘‘এই ফর্মুলা মানলে মূল বেতনের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হবে না। ফলে কর্মীদের বিরাট আর্থিক ক্ষতি হবে। কর্মীস্বার্থের কথা মাথায় রেখে বিষয়টি সরকার এবং কমিশনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।’’
কমিশনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। আশা করা যায় অর্থ দফতরের সঙ্গে আলোচনায় কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy