Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দেশি কাপড়ে পশ্চিমী ডিজাইন

পুজোয় আসা হবে না, তাই আগেই ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন অশোক। ট্রেনে বনগাঁ স্টেশনে নেমেই চোখ আটকে গেল। শহরতলিতে পালাজো, শর্ট টপ পরা সুন্দরীকে দেখে কিছুটা ভিরমি খেয়ে গিয়েছিলেন। পরে ভাবলেন, আধুনিক পোশাক দিয়েই বোধহয় গাঁ থেকে শহর হল বনগাঁ।

মৌ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

পুজোয় আসা হবে না, তাই আগেই ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন অশোক। ট্রেনে বনগাঁ স্টেশনে নেমেই চোখ আটকে গেল। শহরতলিতে পালাজো, শর্ট টপ পরা সুন্দরীকে দেখে কিছুটা ভিরমি খেয়ে গিয়েছিলেন। পরে ভাবলেন, আধুনিক পোশাক দিয়েই বোধহয় গাঁ থেকে শহর হল বনগাঁ।

জিনস্‌, স্কার্ট, শ্রাগ— এ সব তো বহু দিন ধরেই জায়গা খুঁজে নিয়েছে মফসস্‌লের আলমারিতে। সালোয়ার, কুর্তির সঙ্গে টিউশন থেকে কলেজ সর্বত্রই এ সব দেদার পড়ছেন তরুণীরা। তবে এ বার পুজোয় গণ্ডিটা বোধহয় আরও একটু ছড়াবে। ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালও জানান, পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকের চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে জেলায়।

এ বার পশ্চিমী পোশাকের মধ্যে চেনা জিনস্‌ তো রয়েইছে, সঙ্গে জুড়েছে কড বা রংবেরঙের ট্রাউজার্স। ঝুল নিয়েও চলছে হেরফের। কেউ কেউ গোড়ালি ঝুলের প্যান্ট পরছেন, কেউ আবার আর একটু সাহসী হয়ে থ্রি কোয়ার্টার বা হাঁটু ঝুলের প্যান্টও পরছেন। আর টপের হাজারো ডিজাইন তো রয়েইছে। সুতি, জর্জেটের একরঙা টপের সঙ্গে একটা রঙচঙে স্কার্ফ এনে দিচ্ছে পুজোর মেজাজ। বোট নেক বা পিঠে ফিতে বাঁধা টপেরও ভালই চাহিদা আছে। অনেকে রঙচঙে শার্টেও তৈরি করছেন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।

ইন্দো-ওয়েস্টার্ন নানা পোশাকের খুব চল হয়েছে এ বার। অগ্নিমিত্রা জানান, কম ঘের বা বেশি ঘেরের পালাজো প্যান্টের সঙ্গে চলছে লম্বা কুর্তি। তবে প্যান্টের ডিজাইন বোঝাতে কুর্তিগুলি সোজা কাটের হওয়া খুব জরুরি। উঠেছে জর্জেটের লম্বা কুর্তিও। বর্ধমানের কলেজ পড়ুয়া অন্বেষা, মঞ্জরীরা বলে, ‘‘এ বার ফুল হাতা লম্বা ঝুলের কুর্তি মাস্ট। আর তার সঙ্গে একটা ভারি নেকপিস।’’ অনেক পালাজোর নীচে আবার পাকিস্তানের অনুকরণে নানা রকম লেস দেওয়া হচ্ছে। লেসের আলোছায়ায় তন্বী পা চোখ ধাঁধাচ্ছে অনেকেরই। পালাজোর দামও মধ্যবিত্তের বাজাটের মধ্যে। ৫০০ থেকে হাজার খানেকের মধ্যে মিলছে নানা পালাজো। তবে কাপড়ের বৈচিত্র্যে দামেরও হেরফের রয়েছে। জেলায় মাঝবয়েসিদের মধ্যেও লং স্কার্টের খুব চাহিদা রয়েছে এ বার। তাঁদের কথা মাথায় রেখে অনেক দোকানেই বিভিন্ন রকমের র‌্যাপার বা লং স্কার্ট আনছে। র‌্যাপারের মধ্যে মধুবনী, আজরক (রাজস্থানী প্রিন্ট) প্রিন্ট খুব চলছে। রয়েছে জিওমেট্রিক, ফ্লোরাল (ফুল, পাতা) ওয়ারলি (হিউম্যান ফিগার) প্রিন্টও। এই সমস্ত প্রিন্ট স্কেটার স্কার্ট ও টপেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ফ্লোরাল টপের দাম শুরু হচ্ছে ছ’শো টাকা থেকে। অন্য প্রিন্টের টপগুলিও হাজারের মধ্যেই। ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতে, ওয়ারলি প্রিন্টের স্কার্টের সঙ্গে এক রঙের উজ্জ্বল ছোট টপে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন নজরকাড়া। তাই দেরি না করে কিনে ফেলুন শ’পাঁচেকের মধ্যে মধুবনী র‌্যাপার। আর পকেটে টান না থাকলে কাঁথা স্টিচ করা বা কলমকারি আর খেস মেশানো কাপড়ের স্কার্টও কিনতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাংলার নকশার ছোঁয়া আর পশ্চিমী ধরন দুই থাকবে।

ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল জানান, পাশ্চাত্য পোশাকে এ বার পুজোর রং উজ্জ্বল। যেমন, লাল, হলুদ, কমলা, মেরি গোল্ড, ইন্ডিগো ব্লু। দেবী দুর্গার আগমনে প্রকৃতি যেমন ঝলমলিয়ে ওঠে, মনের সেই রঙের ছাপ থাকবে এ বার পোশাকেও। সুতরাং সপ্তাহের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইচ্ছে আর পকেটের হিসেব কষে শনি-রবিবার বেরিয়ে পরুন নিজেকে রাঙাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fashion tips Puja western Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE