Advertisement
০৫ মে ২০২৪

‘আয়, দেখা কর’, শোভনকে ফোন ববির

সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে প্রাক্তন মেয়রকে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ করেন কলকাতার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে ‘ধাক্কা’ খাওয়ার পর তৃণমূলের অন্দরে খোঁজ পড়েছে অধুনা দল থেকে দূরে থাকা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের!

সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে প্রাক্তন মেয়রকে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ করেন কলকাতার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম। যদিও শোভনের তরফ থেকে কোনও ইতিবাচক উত্তর দেওয়া হয়নি বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি।

বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক শোভনের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য, তিনি কেমন আছেন, জানতে চেয়েছিলেন ফিরহাদ। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘ফিরহাদ হাকিম শোভনদাকে বলেন, দেখছিস তো দলের এখন দুর্দিন। এখনও কি মুখ ফিরিয়ে থাকবি? শোভনদা কিছু ক্ষণ চুপ ছিলেন। এর পরে মেয়র শোভনদাকে বলেন, চলে আয়। দেখা কর। কিন্তু শোভনদা তাঁকে কিছু বলেননি। এখন ঘুমোবো বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন।’’

ওই ফোনালাপ নিয়ে শোভনের বক্তব্য জানা যায়নি। বার বার চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। উত্তর আসেনি টেক্সট মেসেজেরও। ফিরহাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দুই বন্ধুর ফোনে কথা হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বলার কিছু নেই।’’

শোভনের বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কালক্রমে আবাসন এবং দমকল দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্ব এবং মেয়র পদ তিনি ছেড়ে দেন। শোভনের স্থলাভিষিক্ত হন ফিরহাদ। সেই থেকেই রাজনীতি এবং তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই শোভনের। সূত্রের খবর, শোভন তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, যে কারণে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে ফিরহাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই মেয়রের সঙ্গে তিনি কেন দেখা করবেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন শোভন। কলকাতা পুরসভার যে ওয়ার্ড (১৩১) থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে সেই ওয়ার্ডের দায়িত্ব শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দিয়েছিল তৃণমূল। এক শোভন-ঘনিষ্ঠের দাবি, ‘‘এতে প্রাক্তন মেয়রের অভিমান আরও বেড়েছে। কয়েক মাস আগে রায়চকে বেড়াতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হুমকির মুখে পড়েছিলেন শোভন এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী। তাঁদের হোটেল ঘিরে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। তখন জেলা পুলিশের কর্তাদের ফোন করেও শোভন কোনও সাহায্য পাননি।’’

শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে সেখানে কথা হয়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেও শোভনের সমালোচনা হয়। শোভনের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘দলের এক নেতা বৈঠকে বলেন, শোভনের অনুপস্থিতিতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের ভাল ফল হয়েছে। রাজনীতিতে ও আর প্রাসঙ্গিক নয়।’’ এই কথাও শোভনের কানে এসেছে বলে দাবি তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের। ফিরহাদের ফোনে তাই শোভনের মন এখনও গলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE