Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Covid Patient

পরিবারের অজান্তে দাহ, হাসপাতালের জরিমানা

গত ২৮ জুলাই কোভিডে আক্রান্ত বৃদ্ধ কালীঘাটের বাসিন্দা করুণরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে (৭০) ডিসান হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর পরিজনেরা। আঠারো দিন ভর্তি থাকার পরে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪৭
Share: Save:

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির দেহ সৎকার হয়ে গেল। কিন্তু কিছুই জানতে পারলেন না রোগীর পরিজনেরা! স্বাস্থ্য কমিশনের কাছে দায়ের হওয়া এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আশি হাজার টাকা মৃতের পরিজনদের ফেরৎ দেওয়ার পাশাপাশি কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত ২৮ জুলাই কোভিডে আক্রান্ত বৃদ্ধ কালীঘাটের বাসিন্দা করুণরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে (৭০) ডিসান হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর পরিজনেরা। আঠারো দিন ভর্তি থাকার পরে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। মৃতের ছেলে সমীর চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বাবাকে ভর্তি করানোর সময়ে রোগীর পরিজনের কাছে অগ্রিম বাবদ দু’লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। এর আগে চাহিদা মতো অগ্রিম না-দেওয়ায় সঙ্কটজনক এক বৃদ্ধাকে অ্যাম্বুল্যান্সেই ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছিল ওই হাসপাতালে বিরুদ্ধে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল রোগীর কাছে অগ্রিম নিতে পারবে না বলে জানিয়েছিল কমিশন। এরই মধ্যে এ দিনের মামলায় মৃতের পরিজনের বক্তব্য হল, বৃদ্ধের ক্যাশলেস বিমা ছিল। তাই অগ্রিম দেওয়ার কথা নয়। শেষ পর্যন্ত এক লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়ে বৃদ্ধকে ভর্তি নেওয়া হলেও পরিজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হত বলে অভিযোগ। গত ১৪ অগস্ট বৃদ্ধের মৃত্যু পরে পরিজনদের সে কথা জানানো হলেও, তাঁদের কিছু না জানিয়ে দেহ সৎকারের জন্য কলকাতা পুরসভার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কমিশনের বক্তব্য, ছেলে জানিয়েছেন, এর জন্য বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে পাননি তাঁরা।

স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘ডিসানের মতো এত অভিযোগ কারও বিরুদ্ধে নেই। ওই হাসপাতালের গিনেস বুকে নাম উঠবে!’’ মৃতের চিকিৎসা বাবদ মোট খরচ হয়েছিল ৭ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫১৯ টাকা। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলির মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বক্তব্য ছিল, মোট বিল থেকে এক লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন।

আর একটি মামলায় কমিশনের কাঠগড়ায় রয়েছে ফ্লেমিং নার্সিংহোম। করোনায় আক্রান্ত শ্যামবাজারের বাসিন্দা তনুশ্রী বসুকে (৫২) গত জুনে তপসিয়ার ওই নার্সিংহোম ভর্তি করানো হয়েছিল। রোগীর ছেলে সুদীপ বসুর অভিযোগ, রোগীর সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হত না। একদিন জোর করে পরিজনেরা তনুশ্রীদেবীকে দেখতে চাইলে তাঁদের জানানো হয়, রোগী ভেন্টিলেশনে রয়েছে। পরিজনদের বক্তব্য, ওই ঘটনার আগে পর্যন্ত তনুশ্রীদেবী ভাল আছেন বলে তাঁদের জানানো হয়েছিল। রোগী ৩৩ দিন ভর্তি ওই নার্সিংহোমে ভর্তি থাকার পরে ১০ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা বিল হয়। অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে পরিজনেরা হইচই করলে রোগীকে এক লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ছাড় মেলে। এ দিন ওই নার্সিংহোমকে আরও এক লক্ষ টাকা ছাড় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Patient Cremation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE