Advertisement
১১ মে ২০২৪

হাওড়ায় খোঁজ অস্ত্র কারখানার, পাকড়াও ৩

ষোলো বাই চোদ্দো ফুটের একটি ঘর। দরজা সব সময়েই বন্ধ থাকত। একটিমাত্র জানলার খানিকটা খোলা থাকলেও তাতে লাগানো ছিল এগজস্ট ফ্যান। ফলে ভিতরে কী ঘটছে, তা বাইরের কারও পক্ষেই জানা সম্ভব ছিল না। মঙ্গলবার বিকেলে হাওড়া সিটি পুলিশ সেখানে হানা দিতে জানা গেল, ঘুপচি ঘরটি আসলে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা।

 উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। মঙ্গলবার, টিকিয়াপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। মঙ্গলবার, টিকিয়াপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

ষোলো বাই চোদ্দো ফুটের একটি ঘর। দরজা সব সময়েই বন্ধ থাকত। একটিমাত্র জানলার খানিকটা খোলা থাকলেও তাতে লাগানো ছিল এগজস্ট ফ্যান। ফলে ভিতরে কী ঘটছে, তা বাইরের কারও পক্ষেই জানা সম্ভব ছিল না। মঙ্গলবার বিকেলে হাওড়া সিটি পুলিশ সেখানে হানা দিতে জানা গেল, ঘুপচি ঘরটি আসলে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা।

এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি, তৈরি হওয়া পিস্তল-সহ বিভিন্ন জিনিস বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের নাম নীরজ আনসারি, মহম্মদ সোহেল আলম ও মহম্মদ আনোয়ার। সকলেই মুঙ্গেরের বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রের খবর, টিকিয়াপাড়ার তস্য গলির ভিতরে ৭৪ নম্বর গঙ্গারাম বৈরাগী লেনের একটি চারতলা বাড়ির একতলাতেই মাস দু’য়েক ধরে চলছিল ওই কারখানা। কখনও দিনে, কখনও বা রাতে দু’-তিন জন ওই ঘরে এসে ঢুকত। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেকেছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। দিন ১৫ আগে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, সন্দেহভাজন কয়েক জন বহিরাগত টিকিয়াপাড়ার ওই বাড়িতে যাওয়া-আসা করছে। এর পরেই গোয়েন্দারা ওই বাড়ির উপরে নজর রাখতে

শুরু করেন।

ঘুপচি ঘরে অস্ত্র তৈরি হচ্ছে, এমন খবর পেয়েই এ দিন বিকেলে বাহিনী নিয়ে সেখানে হানা দেন গোয়েন্দারা। খবর পেয়ে চলে আসেন পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘মাস দু’য়েক ধরে এখানে কাজ চলছিল। খবর পেয়ে আমরা নজর রাখছিলাম। সাম্প্রতিক কালে হাওড়া শহরে এত বড় অস্ত্র কারখানা দেখা যায়নি।’’ পুলিশ জানায়, মাস দু’য়েক আগে মুঙ্গেরের এক যুবক ঘরটি ভাড়া নেয়। ভিতরে যন্ত্রপাতির আওয়াজ হলেও কী কাজ হত, তা কেউ জানতেন না। স্থানীয় যুবক মহম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘‘রোজই দেখতাম, দু’-তিন জন ঢুকছে-বেরোচ্ছে। কিন্তু ওরা কারও সঙ্গে কথা বলত না। সকলকে এড়িয়ে চলত। তা দেখেই সন্দেহ হত।’’

এলাকাবাসীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘরের ভিতরে কাজ চলার সময়ে দরজা বন্ধ রাখা হত। সেই সময়ে কেউ সেখানে গেলেও দরজায় ধাক্কা দিত না। আগে থেকেই ফোনে বলা থাকত। সেই মতো দরজার সামনে এসে ফের ফোন করলেই অল্প ফাঁক করে খোলা হত দরজা। এ দিন পুলিশ ওই ঘর থেকে তিনটে লেদ মেশিন, ৩০০টি পিস্তলের যন্ত্রাংশ ও চারটি প্যাকেট উদ্ধার করেছে। প্রতিটি প্যাকেটে ১০টি করে তৈরি পিস্তল ছিল। এ দিনই সেগুলি বাইরে সরবরাহ করার কথা ছিল। তদন্তকারীরা জানান, এই কাজের সঙ্গে স্থানীয় কে বা কারা যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Howrah Arms Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE