হয়রানি: এনজেপি স্টেশনে প্রিপেড ট্যাক্সি বুথের সামনে পর্যটক ও যাত্রীদের ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
শিলিগুড়ি মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে যাত্রী পরিষেবা বাড়াতে সংস্কার প্রয়োজন হলেও অনেক ক্ষেত্রে রাজ্যের অসহযোগিতায় তা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলল রেল। বৃহস্পতিবার উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত এনজেপিতে গিয়ে অসহযোগিতার এই অভিযোগ তোলেন। বিশেষত, জবর দখল ওঠাতে আরও একবার রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চান তিনি। যদিও অসহযোগিতার প্রশ্নে মুখ খুলতে চায়নি জেলা প্রশাসন। টয় ট্রেনের লাইন ও স্টেশন সংস্কারের কাজ শুরুর আগে রাজ্য সরকার, জিটিএ এবং পাহাড়ের স্থানীয়দের নিয়েও বৈঠক করতে চায় রেল।
সিপি গুপ্ত বলেন, ‘‘এনজেপি স্টেশন, শিলিগুড়ি জংশন এবং শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন এ দিন ঘুরে দেখলাম। বেশ কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছি আমরা। কিন্তু তাতে জবরদখল ওঠানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করছে না রাজ্য।’’
রেলের তরফে তিনটি স্টেশনের সংস্কার কাজে হাত দেওয়ার আগেই জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জবরদখল ওঠানোর সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে এখনও সে রকম কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি জেলা প্রশাসন। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়শী দাশগুপ্ত।
ডিআরএম সিপি গুপ্ত বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি জংশনে একটি পার্কিং এলাকা তৈরি করতে হবে। টাউন স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম লম্বা করতে হবে। কিন্তু ওই এলাকায় লাইনের উপরই বাজার বসছে। দার্জিলিং মোড়ে ওয়াই চ্যানেল তৈরি করে মালবাহী গাড়ির রাস্তা বদল করা প্রয়োজন। তাতে রেলের আয় যেমন বাড়বে, যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিরও সুবিধা হবে।’’
তাঁর অভিযোগ, এনজেপি এলাকাতেও দিনের পর দিন দখল হয়ে চলেছে রেলের জমি। নোটিশ দিয়েও রাজ্যের সাহায্য না মেলায় কিছুই করতে পারছে না রেল। শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি তা চালু হলে বাড়তি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কিন্তু হিলকার্ট রোড থেকে স্টেশনে ঢোকার মুখটি খুবই ছোট। সেটি বাড়ানো প্রকল্প হাতে নিয়েও প্রায় ১২৫ জন জবরদখলকারীর জন্য তা বাড়াতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল সূত্রের খবর, ইউনেসকোর নজরদারিতে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের (ডিএইচআর) সার্বিক উন্নতির প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের লাইন সংস্কার থেকে শুরু করে পাহাড়ে স্টেশনগুলির সংরক্ষণের জন্য রাজ্য সরকার, জিটিএ এবং পাহাড়ের স্টেশনগুলির পাশের স্থানীয়দের সঙ্গেও আলোচনা করে সেগুলি রক্ষার ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে চায় রেল।
রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, ইউনেসকোর ঐতিহ্যবাহী স্বীকৃতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং তা রক্ষা করা কেন দরকার তা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আগে আলোচনা করা দরকার। এ মাসের শেষেই সেই বৈঠক করার কথা ইউনেসকোর। সেখানে তাদের তৈরি করা খসড়া সংরক্ষণ রিপোর্ট পেশ করার পরই চূড়ান্ত কাজ শুরু হবে। গত বছর পাহাড়ে আন্দোলনের সময় ডিএইচআরের দু’টি স্টেশন সোনাদা এবং গয়াবাড়ি আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আন্দোলনের জেরে ক্ষতি হয় ডিএইচআর এর সদর দফতর এলিসিয়া বিল্ডিংটিও। সেগুলি মেরামতি এবং পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে রেল।
এনজেপি স্টেশনের তিনটি ফুট ওভারব্রিজের মধ্যে মাঝেরটির দৈর্ঘ্য বাড়ানো হবে। বৃহস্পতিবার এনজেপিতে এ কথা জানান, কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত। তিনি জানান, এনজেপি ছাড়াও শিলিগুড়ি স্টেশনেও একটি নতুন ফুট ওভারব্রিজ তৈরি হবে। কাটিহার ডিভিশনের শিলিগুড়ি জংশনসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৭টি নতুন ফুট ওভারব্রিজ তৈরি হবে। রায়গঞ্জ স্টেশন সহ ৬টির মেরামতি করা হবে। এনজেপি স্টেশন থেকে হকার সরানো এবং ডিএইচআরের লাইন বরাবর গার্ডওয়াল তৈরির ব্যাপারে বাধা পেয়ে বিরক্ত রেল।
কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত জানান, দুটি করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়ছি আমরা। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চান রেলের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy