Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শরিকদের ‘না’, বিকল্প নিয়ে অপেক্ষায় কংগ্রেস

প্রদেশ কংগ্রেসও দলের অন্দরে নানা বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করার পাশাপাশি জট কাটাতে সিপিএমের দিকেই তাকিয়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৭
Share: Save:

কয়েক দিন আগেই ভিড়ে ঠাসা ব্রিগেড সমাবেশে এক সুরে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন গোটা বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। কিন্তু সেই একই লক্ষ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বেসুর ধরা পড়ল বামফ্রন্টে! আলোচনার জন্য কংগ্রেসের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন কিছু শরিক দলের নেতা। বেগতিক সামাল দিতে সিপিএম তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসতে চলেছে। প্রদেশ কংগ্রেসও দলের অন্দরে নানা বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করার পাশাপাশি জট কাটাতে সিপিএমের দিকেই তাকিয়ে।

প্রাথমিক আলোচনায় সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব একমত যে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফল থেকে রসদ নিয়েই রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মহড়া শুরু হবে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে তৃণমূল-বিরোধী রাজনীতির পরিসরে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে বাম ও কংগ্রেসের কাছাকাছি আসা দরকার। গত বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতার পরেও সিপিএমের দলীয় রাজনৈতিক লাইনের কারণে তারা কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া থেকে সরে এসেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে সর্বভারতীয় দল হিসেবে তাঁদের ‘দায়’ বেশি, এই বাস্তব মাথায় রেখে কংগ্রেস নেতৃত্বই রফার জন্য প্রথম পদক্ষেপ করেছেন। সিপিএমের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তিন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরাই।

বামেদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে যে যে সমস্যা দেখা দিতে পারে, তার সম্ভাব্য সূত্র ছকে রাখার জন্য রবিবার দফায় দফায় আলোচনায় বসেছিলেন সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী-সহ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। ঠিক হয়েছে, উত্তর মালদহকে ‘খোলা আসন’ হিসেবে রেখে বোঝাপড়ার চেষ্টা হবে। রায়গঞ্জ নিয়ে আগ্রহী দীপা দাশমুন্সি উত্তর মালদহে দাঁড়াতে পারেন অথবা রায়গঞ্জের বর্তমান সাংসদ, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম ওই আসন ছেড়ে উত্তর মালদহে সরে আসতে পারেন— এই দুই সম্ভাবনা খোলা রেখেই দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথা হবে। কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘‘সব সমস্যাই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। শুধু সকলকে সদিচ্ছা দেখাতে হবে।’’

ফ ব, আরএসপি-র নেতারা অবশ্য কংগ্রেস নেতৃত্বকে বলেছেন, সমঝোতা করেও তাঁদের আসন জয়ের তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। তা হলে আর ‘জাত খুইয়ে’ হারার কি দরকার? যা শুনে সিপিএম নেতৃত্বের একাংশেরও প্রশ্ন, হারের আগেই হারের কথা বলে তৃণমূল এবং বিজেপিকে কি ময়দান ছেড়ে দিতে চাইছে শরিকেরা? তাদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনার জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা। সূত্রের খবর, আরএসপি-র ‘ভাগে’র আসন বালুরঘাট, জয়নগর বা সিপিআইয়ের মেদিনীপুর, ঘাটাল নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তেমন সংঘাতের সম্ভাবনা কম। কিন্তু কংগ্রেস পুরুলিয়ায় লড়তে চায় বলেই ফ ব-র সঙ্গে তাদের টক্কর বেশি। তাঁদের লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ফের বলেছেন, ‘‘মোদীর সরকার ক্ষমতায় ফিরে এলে দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির যতটুকু বেঁচে আছে, তারও মৃত্যুঘণ্টা বাঁচবে! আর সেই সঙ্গে বাংলায় গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই করতে গেলে তৃণমূলকেও রুখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm Congress BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE