রাজ্যে কেরোসিন বিতরণের আইনি ঝামেলা কাটল হাইকোর্টের রায়ে।
তৃণমূল সরকার কেরোসিন বণ্টন নিয়ে যে-নীতি গ্রহণ করেছে, ৭ অগস্ট তার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেওয়ায় জয় হল রাজ্যের। মামলার দরুন অগস্টে কেরোসিন বিতরণ করা যায়নি বলে জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। স্থগিতাদেশ রদের ফলে তেল বণ্টনের সেই বাধা কেটে গেল।
সরকারি কৌঁসুলি শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য গত ১১ জুলাই কেরোসিন বণ্টনের ব্যাপারে একটি নীতি গ্রহণ করে। তাতে বলা হয়, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জঙ্গলমহল, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, সুন্দরবন, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার যে-সব বাসিন্দার রেশন কার্ড আছে, তাঁরা প্রতি মাসে মাথাপিছু এক লিটার কেরোসিন পাবেন। ডিজিটাল রেশন কার্ডধারীরা পাবেন মাথাপিছু ৬০০ মিলিলিটার। ডিজিটাল কার্ড না-থাকলে মিলবে মাথাপিছু দেড়শো মিলিলিটার তেল।
সেই নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন কিছু রেশন ডিলার ও গ্রাহক। ৭ অগস্ট শুনানিতে তাঁদের আইনজীবীরা বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের এজলাসে
জানান, কোন এলাকায় কত লোকের বাস, তাঁদের কেরোসিনের প্রয়োজন কতটা, এই সব বিষয়ে সমীক্ষা না-করেই রাজ্য ওই নীতি নিয়েছে। বিচারপতি বাগ সেই নীতির উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেন। তাঁর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার।
মূল মামলার আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী জয়দীপ কর এ দিন ডিভিশন বেঞ্চে জানান, রাজ্য সব নাগরিকদের হাতে এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড তুলে দিতে পারেনি। সেই দায়িত্ব প্রশাসনেরই। ফলে কোনও নাগরিকের ডিজিটাল কার্ডের বদলে অন্য কার্ড (কাগজের) থাকলে তিনি মাত্র দেড়শো মিলিলিটার কেরোসিন পাবেন, এই নীতি বৈষম্যমূলক।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতে জানান, সরকারকে হলফনামা পেশের সুযোগ না-দিয়েই বিচারপতি বাগ স্থগিতাদেশ জারি করেন। গত বছর একটি মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, শহর ও গ্রামের বাসিন্দাদের কেরোসিনের চাহিদায় পার্থক্য আছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি ও জ্বালানির জোগানের ভিত্তিতে ওই তেল বণ্টনের বন্দোবস্ত করা উচিত। ডিভিশন বেঞ্চের সেই পর্যবেক্ষণ মেনেই রাজ্য ১১ জুলাই কেরোসিন বণ্টনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অনুযায়ী নীতিও গ্রহণ করেছে।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি এবং বিচারপতি মির দারা শিকোর ডিভিশন বেঞ্চ ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy