প্রতীকী ছবি।
বিক্ষোভ সামলাতে নরম-গরম সব দাওয়াই নিয়ে আসরে নামলেন বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে বিক্ষোভ যে আকার নিয়েছে তার মোকাবিলায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শনিবার বলেন, ‘‘যাঁদের ক্ষোভের প্রকাশ চলতেই থাকবে, তাঁদের দলের বাইরে যেতে হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ দিন বৈঠকে বলেন, অনেকেই যে প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষুব্ধ, তা বিভিন্ন ভাবে স্পষ্ট। কিন্তু জীবনে ভোটে লড়ার এটাই শেষ সুযোগ নয়। প্রত্যেকের সামনেই ভবিষ্যতে আরও অনেক ভোটে লড়ার এবং দলের পদাধিকারী হওয়ার সুযোগ আসবে। আর যাঁরা প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখাবেন, তাঁরা যেন মনে রাখেন, বিজেপি একটি সুশৃঙ্খল দল।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক এবং ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অরবিন্দ মেননও বলেন, ট্রেন মিস হওয়ার পরেও যাঁরা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকবেন, তাঁরা পরের ট্রেনে উঠতে পারবেন। এ দিন জাতীয় গ্রন্থাগারের অডিটোরিয়ামে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি বৈঠকে বিক্ষোভ প্রশমনের বার্তাই ছিল বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তৃতার মূল সুর।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন দক্ষিণবঙ্গের ১৮ জন প্রার্থী বৈঠকে ছিলেন। বৈঠকে যাননি বীরভূম, ঝাড়গ্রাম এবং জয়নগরের প্রার্থী যথাক্রমে দুধকুমার মণ্ডল, কুনার হেমব্রম এবং অশোক কাণ্ডারী। উত্তরবঙ্গের প্রার্থীদের মধ্যে এক মাত্র রায়গঞ্জের প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। জঙ্গিপুরের প্রার্থীর নাম বিজেপি এ দিন ঘোষণা করেছে। ওই লোকসভায় তাদের প্রার্থী প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মাফুজা খাতুন। ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল, বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার প্রাক্তন সিপিএম প্রার্থী আইনুল হক এ দিন ওই বৈঠকেই বিজেপিতে যোগ দেন।
দিলীপবাবু বৈঠকে বলেন, ‘‘২৩ মে ২৩টি আসন নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দেব, সে অধিকার আপনারা আমাকে দিন।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘কাউকে বিজেপি, দলের নেতৃত্ব বা উন্নয়ন বোঝানোর প্রয়োজন নেই। শুধু প্রতি বাড়িতে গিয়ে বলতে হবে, বিজেপি জিতবে। মোদীজি আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। আপনারা আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সেই জয়ের অংশীদার হোন। একটা বাড়িও যেন বাদ না পড়ে। বিরোধী ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে একই আবেদন করুন।’’ দিলীপবাবুর আরও হুঁশিয়ারি, ‘‘১০-২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে যেন কেউ না হারেন। এক জনও যেন বলতে না পারেন, বিজেপির কেউ আসেননি বলে পদ্মফুলে ভোট দিতে পারলাম না।’’
বৈঠকে স্থির হয় লোকসভা ভোটের প্রচারে রাজ্যে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দলের সভাপতি শাহ ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিজেপি সূত্রের খবর, ৩ এপ্রিল মোদীকে দিয়ে ব্রিগেডে সভা করানোর চেষ্টা হচ্ছে। সে দিনই শিলিগুড়িতে মোদীর সভা করার ভাবনাও রয়েছে। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, দুপুর একটায় শিলিগুড়িতে এবং দুপুর তিনটেয় ব্রিগেডে মোদীর সভা করা সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ছাড়া বালুরঘাট, কৃষ্ণনগর, আসানসোল, শ্রীরামপুরে সভা করার কথা মোদীর। শাহের সভা হওয়ার কথা কোচবিহার, রায়গঞ্জ, কৃষ্ণনগর ও বীরভূমে। যোগীর সম্ভাব্য সভাস্থল মালদহ উত্তর, বালুরঘাট, ঘাটাল ও বসিরহাট। দলীয় সূত্রে আরও খবর, ২, ৪, ৭ এবং ৯ এপ্রিল যথাক্রমে শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, খড়্গপুর বা মেদিনীপুর এবং কলকাতায় প্রার্থী ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন শাহ। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় এসে বৈঠক সেরে পর দিন তাঁর দিল্লি ফেরার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy