Advertisement
১১ মে ২০২৪

করে খাওয়াদের দিয়েছি বার করে: অভিষেক 

পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী দু’লক্ষেরও বেশি ব্যবধানে জিতবেন বলে দাবি করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আলোচনা: গুঞ্জা সবনপুর ফুটবল ময়দানে অভিষেকের সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী। ছবি: সুজিত মাহাতো।

আলোচনা: গুঞ্জা সবনপুর ফুটবল ময়দানে অভিষেকের সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী। ছবি: সুজিত মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
জয়পুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪৭
Share: Save:

পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী দু’লক্ষেরও বেশি ব্যবধানে জিতবেন বলে দাবি করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার পুরুলিয়ার জয়পুরের গুঞ্জা ফুটবল ময়দানের কর্মিসভার ভিড় দেখে তৃণমূলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক বলেন, ‘‘১৮০০-১৯০০ বুথ থেকে ১০ জন করে এসেছেন। তাতেই মিনি ব্রিগেডের চেহারা নিয়েছে। এ দিনের সভা দেখে কলকাতায় ফিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করতে পারি, পুরুলিয়ায় আমাদের জয় নিশ্চিত। ২ লক্ষের বেশি ব্যবধানে আমাদের প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো জিতবেন।’’ তিনি বাঁকুড়া জেলারও পর্যবেক্ষক। দাবি করেন, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর কেন্দ্রেও তৃণমূল প্রার্থীরা জিতবেন।

নিজে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের প্রার্থী হলেও পুরুলিয়ায় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে ভোটের আগে এই জেলার বারবার আসবেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়া ২ ব্লকে যেখানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ সভা করেছিলেন, আগামী ২৯ মার্চ সেই একই মাঠে তৃণমূলের মিনি ব্রিগেড করব। ৬ মার্চ পাড়া ব্লকে সভা করব। সেখানে একটি ব্লক থেকেই ৩০ হাজার মানুষের সমাবেশ করে দেখাব।’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলায় কার্যত শূন্য থেকে সাফল্যের মুখ দেখেছে বিজেপি। অন্যদিকে, জঙ্গলমহল ও শিল্পাঞ্চল বলে পরিচিত রঘুনাথপুর মহকুমার কিছু এলাকায় ‘বিপর্যস্ত’ হয়েছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিনের সভায় অভিষেকের গলায় আত্মসমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের মধ্যে কিছু ভুল-ত্রুটি ছিল। কিছু মানুষ নিজেরা করে খাব বলে দলের বদনাম করেছিলেন। তাঁদের আমরা দল থেকে বার করে দিয়েছি। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে পারি, আপনারা মাথায় রাখবেন, এই দলটা আর যাই হোক, কোনও দিন মানুষের সঙ্গে বেইমানি করবে না। এই দল কোনও দিন বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করেনি।’’ কর্মীদের তিনি মনে করিয়ে দেন, এই লড়াই মোদী আর দিদির লড়াই। কোনও ভাবেই এক ইঞ্চিও জমি ছেড়ে দেওয়া যাবে না। কর্মীদের তিনি অতন্দ্র প্রহরীর মতো বুথ রক্ষা করতে বলেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পঞ্চায়েত ভোটের পরেই জেলার কিছু এলাকায় অশান্তি হয়। সে জন্য অভিষেক বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০১৮ সালে মুষ্টিমেয় কিছু সাম্প্রদায়িক ‘অসুর’ কিছু বুথে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। শান্তির পুরুলিয়াকে অশান্ত করে তুলেছিল। ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে এনে খুন করে অশান্ত করার চেষ্টা বারবার করেছে। আমরা তার যোগ্য জবাব দিয়েছি। আমি বলেছি, আমি থাকতে, পুরুলিয়াকে অশান্ত হতে দেব না।’’

বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলা তৃণমূলের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। ঝাড়খণ্ড থেকে গুন্ডা আনার প্রশ্নই নেই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে-পরে আমাদের দলের লোকেরাই খুন হয়েছেন। মানুষ দেখেছেন, কোন দলের আশ্রিত গুন্ডারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে। পুরুলিয়ায় পরাজয় জেনেই অভিষেক ভিত্তিহীন কথা বলছেন।’’

দলের কর্মীদের এককাট্টা হওয়ার ডাক দিয়ে জেলা তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের শক্তি কম নয়। কিন্তু, কোথাও কোথাও বুথ স্তরে একে অন্যকে সহ্য করতে পারছেন না, এই মনোভাব বিসর্জন দিয়ে দলের জন্য কাজ করতে হবে।’’ এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো, প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো-সহ বিধায়কেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE