ভোট নির্বিঘ্ন করতে শুধু দুষ্কৃতীরাই নয়, বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে হাতি।
জেলার উত্তেজনাপ্রবণ বুথের হিসাব পাকাপাকি ভাবে তৈরি না হলেও, কষে ফেলা হয়েছে হাতি উপদ্রুত এলাকার বুথের সংখ্যা। সেখানে ভোটকর্মীদের কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হবে, তা ঠিক করতে বন দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকও সেরে ফেলেছেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গল লাগোয়া এলাকার মানুষজন হাতিদের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু, ভোট কর্মীরা ওই এলাকা সম্পর্কে এবং হাতিদের মতিগতি নিয়ে ততটা সচেতন নন। এই অবস্থায় ভোট করাতে গিয়ে কোনও ভাবেই যাতে হাতির মুখে ভোটকর্মীদের পড়তে না হয়, তা নিশ্চিত করতে বন দফতরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পাঞ্চেৎ ডিভিশন এবং বাঁকুড়া উত্তর ডিভিশনে বছরে কয়েকবার দলমার হাতির পাল পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে ঢুকে পড়ে। জানুয়ারিতে এসেছিল ২৮-৩০টি হাতির দল। বড়জোড়ায় হাতির হানায় মৃত্যুও হয় এক মহিলার। বেলিয়াতোড়, বড়জোড়া, গঙ্গাজলঘাটি প্রভৃতি রেঞ্জে ফসল ও লোকজনের ঘরবাড়িও ভাঙচুর করে।
তবে, বন দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, হাতির পালটি সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরে গিয়েছে। ভোটের আগে তাতে স্বস্তি মিলেছে ঠিকই। তবে, হস্তি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হাতির মন বোঝা দায়। এই জেলায় ভোট রয়েছে ১২ মে। তার মধ্যে হাতির দলটি যে ফিরে আসবে না, সে নিশ্চয়তাও নেই!
তার উপরে এই জেলার বিভিন্ন জঙ্গলে প্রায় ন’টি ‘রেসিডেন্ট’ হাতি (স্থায়ী ভাবে থেকে যাওয়া) রয়েছে। বন দফতর জানাচ্ছে, তার মধ্যে এই মুহূর্তে ছ’টি হাতি বড়জোড়া, একটি বেলিয়াতোড় ও দু’টি গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জের জঙ্গলে রয়েছে। দলমার পাল চলে গেলেও রেসেডেন্ট হাতিদের নিয়েও চিন্তার অন্ত নেই।
অতীতে হাতিদের জন্য ভোটগ্রহণ ব্যাহত হওয়ার কথা স্মরণ করতে না পারলেও বড়জোড়ার বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ও ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় ওই এলাকায় হাতির উপদ্রব বেড়েছিল। সে বার তাই বেলিয়াতোড় ও বড়জোড়ার রেঞ্জের কিছু এলাকায় ভোটকর্মীদের পুলিশ ও বনকর্মীরা বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে জঙ্গলপথে বুথে নিয়ে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ভোট কর্মীদের জন্য ইতিমধ্যেই কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বনকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোটের কাজে যাওয়া বুথ কর্মীদের সঙ্গে যেন পর্যাপ্ত পটকা (ক্র্যাকার) দেওয়া হয়। ফল, ডাল জাতীয় সামগ্রী এমনকি গুড় যেন সঙ্গে না থাকে। ডিএফও (উত্তর) ভাস্কর জেভি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ভোটের দু’দিন আগেই হাতিগুলিকে লোকালয় থেকে দূরের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy