গোটা ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোগালী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাস্সর হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি চেক পেয়ে তৃণমূলকে ভোট না দিলে কী ঘটতে পারে, সে কথা উপভোক্তা চাষিদের ‘মনে করিয়ে’ দিলেন দলের পঞ্চায়েত প্রধান। বললেন, ‘‘ভোট আমাদের না দিলে চাষিদের কার্ড কেড়ে নেওয়া হবে। ওই কার্ড না থাকলে মৃত্যুর পরে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হবে।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের তৃণমূল পরিচালিত ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাসের হোসেনের এমন কথাবার্তার একটি ভিডিয়ো আনন্দবাজারের হাতে এসে পৌঁছেছে। তার সত্যতা অবশ্য খতিয়ে দেখা হয়নি। ভিডিয়োতে প্রধানকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এই চেক আমাদের দিদি দিচ্ছেন। অতএব দিদিকে ভোট দিতে হবে। আমাদের এখানে লোকসভার প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। ওই প্রার্থীকেই আপনাদের ভোট দিতে হবে।’’
সোমবার পঞ্চায়েত অফিসে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের চেক বিলির অনুষ্ঠনে হাজির হন প্রধান। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুধু তোমরা নয়, এই এলাকায় ১১ হাজার ভোটার রয়েছে। ওই সব ভোটারদেরও মিমি চক্রবর্তীকে ভোট দেওয়ার জন্য বোঝাতে হবে। গত পঞ্চায়েতে এখানে ভোট হয়নি। কিন্তু এ বার ভোট হবে। সে কারণেই আমাদের সকলকে সক্রিয় হতে হবে। তোমরা মিমি চক্রবর্তীকে ভোট দেওয়ার জন্য বাকিদের বোঝাবে।’’
তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট না দিলে সরকারি সুবিধা বন্ধের হুঁশিয়ারি, দেখুন সেই ভিডিয়ো
প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই তৈরি হওয়ায় এ ক্ষেত্রে চেক বিলিতে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়নি বলে জানাচ্ছেন ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিক মাইতি। তবে চেক বিলি প্রধানের করার কথা ছিল না বলেই তাঁর দাবি। এমনকি, ওই অনুষ্ঠানে মোদাসেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও জানিয়েছেন বিডিও। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত অফিসে সরকারি কাজের সময়ে প্রধান কী ভাবে এলেন এবং ওই চেক বিলি করলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রির্টানিং অফিসার তথা জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর বলেন, ‘‘ওই অফিসে আপাতত চেক বিলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানকে শো-কজ করা হয়েছে।’’
মোদাসেরের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস-এরও উত্তর দেননি।
বিষয়টি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে তাঁর দলের নেতারা। সরাসরি মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি
এ বিষয়ে কিছুই জানি না। খোঁজ
নিতে হবে।’’
ভোটের মুখে এমন ঘটনায় সমালোচনার সুযোগ ছাড়ছে বিরোধী শিবির। সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিডিয়োতে সব দেখা-শোনা যাচ্ছে। বিষয়টা নতুন কিছু নয়। রাজ্যজুড়ে এমন সন্ত্রাসেরই মুখোমুখি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জীবনহানির ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।’’
মিমির বিরুদ্ধে যাদবপুরে বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়ছেন অনুপম হাজরা। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমুল ভয় পেয়েছে। ওরা বুঝতে পেরেছে, মানুষের বুকে পদ্মফুল ফুটে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy