হরেকৃষ্ণ সরকার। —নিজস্ব চিত্র
এক কেন্দ্রে টুপি। আরেক কেন্দ্রে ফুটবল। প্রতীক আলাদা হলেও প্রার্থী একই। তাঁকে নিয়েই এখন জোর আলোচনা ভোটের বাজারে।
দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা এলাকার ভোটার হরেকৃষ্ণ সরকার। ভোটে তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ছেন কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, নির্দলদের ‘ফ্রি’ সিম্বল থেকে প্রতীকের আবেদন জানাতে হয়। কোচবিহার কেন্দ্রে হরেকৃষ্ণ প্রতীক পেয়েছেন টুপি। বৃহস্পতিবার ওই প্রতীক নির্দিষ্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শুক্রবার জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে তাঁর জন্য প্রতীক বরাদ্দ করা হয় ফুটবল।
কোচবিহারের শীতলখুচি কলেজের শিক্ষক হরেকৃষ্ণ অবশ্য জানান দুই কেন্দ্রে একই প্রতীক হলে তাঁর সুবিধে হত। তিনি বলেন, “আমি নির্দল হয়ে লড়ছি ঠিকই তবে আমি একটা দল করি। তবে তা স্বীকৃত রাজনৈতিক দল নয়। তাই নির্দল প্রার্থী হয়েছি। অনুগামীদের সিদ্ধান্ত মতো দুটো কেন্দ্রে লড়ছি। দুই কেন্দ্রে প্রতীক এক হলে ভাল হতো। সেটা হয়নি। সেসব নিয়ে এখন আর ভাবতে চাইছি না।” একসময় আরপিআই(এ) দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরে নিজের উদ্যোগে গড়েছেন অ্যাবরিজিনালস পার্টি অফ ইন্ডিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘সমাজের সব সম্প্রদায়ের সমান উন্নয়নই লক্ষ্য।’’ পিছিয়ে পড়াদের সুযোগ ধরে রাখা, এনআরসি বিরোধিতাও প্রচারে ইস্যু করছেন তিনি।
হরেকৃষ্ণ অবশ্য আগেও একাধিকবার লোকসভা, বিধানসভা ভোটে লড়েছেন। এ বারের মতো লোকসভার দুটি কেন্দ্রে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও লড়েছিলেন। প্রতীক অবশ্য একই ছিল, সেলাই মেশিন। সেবার কোচবিহার কেন্দ্রে আরপিআই(এ) প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে তিনি ৫,৭৯৬টি, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে পেয়েছিলেন ৭,৬৩৬টি ভোট। ২০০৯ সালে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে একই দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পেয়েছিলেন ৩,৪০৫টি ভোট। ২০১১ সালে মাথাভাঙা বিধানসভায় নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়াই করে তিনি পান ১,০৭৯টি ভোট। ২০১৬ সালেও তিনি ওই কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোট পান ১৩৫৩টি। নিজের হলফনামায় মাথাভাঙা থানায় রুজু হওয়া একটি মামলার কথা জানিয়েছেন তিনি। ওই প্রসঙ্গে হরেকৃষ্ণের দাবি, “পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাস্তা অবরোধের জেরে ওই মামলা রুজু করা হয়েছিল।”
ফাঁসিদেওয়ার ভোটার হলেও মাথাভাঙাতেও একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর। হরেকৃষ্ণ বলেন, দার্জিলিং জেলায় আমার পৈতৃক বাসস্থান। চাকরিসূত্রে শীতলখুচিতে থাকতে হয়। তাই মাথাভাঙাতেও বাড়ি করেছি। শীতলখুচি কলেজের অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন বলেন, “ভোটে লড়ার অধিকার গণতন্ত্রে সবার।” ভোটারদের অনেকে বলছেন, ‘‘টুপি-ফুটবলের লড়াইয়ে প্রাপ্ত ভোটে কে কাকে টেক্কা দেয় তাও দেখার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy