Advertisement
১০ মে ২০২৪

গাড়ি ধরো, টাকা নাও চলছে কেন? অভিযোগ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতার

উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ নয়ছয় ঠেকাতে আগেই কাটমানি রুখতে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

রবিশঙ্কর দত্ত ও আনন্দ মণ্ডল
দিঘা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

গোটা রাজ্যেই বেআইনি ভাবে মামলায় জড়িয়ে টাকা তুলছে পুলিশ।

অন্য কেউ নন, প্রশাসনিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পাশে বসিয়েই এই অভিযোগ করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথ নিরাপত্তার নাম করে পুলিশের এই কাজে চূড়ান্ত বিরক্তি প্রকাশ করে ওই বৈঠকেই তা বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা খারাপ কাজ করলে বদনাম আমাদের হয়। পুলিশের ভাইবোনেরা বুঝতে পারছেন তো? রাজনীতির লোকেদের বদনাম একটু তাড়াতাড়ি হয়।’’ ভরা সভায় মুখ্যমন্ত্রী যখন এই ঘটনা উল্লেখ করেছেন, বৈঠকে তখন হাততালি দিয়ে তা সমর্থন করেছেন উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা।

উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ নয়ছয় ঠেকাতে আগেই কাটমানি রুখতে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ প্রকল্প নিয়েও তোলাবাজির কথা সামনে এনেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এত বেশি মামলা করা হচ্ছে কেন?

সারা রাজ্যেই হচ্ছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাস্তায় নামিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে।’’ উপস্থিত ডিজি-র উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে অন্যায় করছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু ব্যবস্থা মানেই কেস দেওয়া নয়! অ্যাকশন মানেই টাকা নয়। গাড়ি ধরো, টাকা নাও— চলছে কেন? আমাদের মানবিক হতে হবে।’’

সরকারি সূত্রে খবর, রাস্তায় পুলিশের এই টাকা আদায় নিয়ে পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তা-ই নয়, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও এ নিয়ে অভিযোগ এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের এই প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘থানার আই সি-রা বলে দিলেন, যা টাকা নিয়ে আয়, তাতে পরের বিষয়টা তাঁর হাতে থাকে না।’’ বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ ব্যাপারে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ পাণ্ডেকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই তোপের মুখে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পদক্ষেপ করবেন বলে জানান। তাতেও আশ্বস্ত হতে না পেরে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের মত জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সুরজিৎবাবু তখন বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়াররা তো কাগজপত্র দেখতে চাইতে পারেন না।’’ স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE