—ফাইল চিত্র।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমনের পাশাপাশি গোয়েন্দা-তথ্য সংগ্রহে পুলিশবাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্যই তিনি গোয়েন্দা-তথ্য সংগ্রহের উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিতে চাইছেন বলে প্রশাসনিক শিবিরের একাংশের অভিমত।
সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও কলকাতার পুলিশ কমিশনার, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং অন্যান্য পদস্থ পুলিশ অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিডিয়ো-সম্মেলনের মাধ্যমে সেই বৈঠকে যোগ দেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারেরাও।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশের কাজে অনেক ক্ষেত্রেই সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। জেলা পর্যায়ের অফিসার এবং রেঞ্জ ও জোনাল স্তরের অফিসারদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। রুটিন কাজের পাশাপাশি এলাকার খবরাখবর রাখার ব্যাপারে আরও তৎপর হতে হবে পুলিশকে।’’
আরও পড়ুন: ডায়মন্ড হারবারের যুব নেতাদের নিরাপত্তা দেবে নবান্ন
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সীমানা ঘেঁষা এলাকাগুলিতে ভিন্ রাজ্যের লোকজন ঢুকে পড়ছে। নানা ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপেও জড়িয়ে পড়ছে তারা। বহিরাগতদের ব্যাপারে বিশেষ নজর তো দিতেই হবে। সেই সঙ্গে নজর রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার গতিবিধির উপরেও।
বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের এ দিন কয়েকটি নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৬ ডিসেম্বর (বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন) যাতে কোনও উত্তেজনা তৈরি না-হয়, সেই ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি। সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কোনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতেও বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, প্রায় সওয়া লক্ষ সিভিক ভলান্টিয়ার ও কয়েক হাজার ট্রাফিক হোমগার্ডকে ঠিকমতো কাজে লাগানো হোক।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠকের নেপথ্যে পুলিশ-প্রশাসনকে তৎপর করার পাশাপাশি রাজনৈতিক কুৎসার মোকাবিলা করার কৌশলও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে থেকে বিজেপি-সহ বিরোধীরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির শোচনীয় দিকটিই বারবার তুলে ধরছিল। বিশেষত, জেলায় জেলায় রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে অনেক ক্ষেত্রেই বেকায়দায় পড়েছে সরকার। গণপিটুনি নিয়ে দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এ রাজ্যেও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। খুন-ধর্ষণের ঘটনাও প্রায়ই চলে আসছে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। সেগুলো দেখেই মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন। কারণ, ২০২১ সালের ভোটের আগে রাজ্যের পরিস্থিতি ‘অস্থির’, এমন ভাবমূর্তি কোনও মতেই চান না মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভা ভোটের সময় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, বিজেপি বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে লোক এনে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিগড়ে দিচ্ছে।
ইদানীং হায়দরাবাদের দল ‘মিম’-এর উপস্থিতি নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। গোয়েন্দা-তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে আসলে তিনি সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলি সম্পর্কে সজাগ করে দিয়েছেন বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহলের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy