ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ আগামী মাসের গোড়ায় ঠিক করবে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু ভোটে লড়ে জেতা প্রার্থীদের নামে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে জটিলতা এখনও কাটল না। এই প্রার্থীদের নাম গেজেটে প্রকাশের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু পঞ্চায়েত আধিকারিকদের একাংশের মতে, দু’টি আলাদা গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির সুযোগ পঞ্চায়েত আইনে নেই। অন্য অংশ আবার বলছেন, আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করা যেতেই পারে। এই অবস্থায় কী করণীয় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেই ছেড়েছে দফতর। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মামলা মেটার আগে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে কি না, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ যদিও নবান্ন এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।
বিজ্ঞপ্তি জারি না-হলেও ভোটে জেতা নতুন পঞ্চায়েত সদস্য-সদস্যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ ১৬ জুলাই থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে। বিনা ভোটে জেতা প্রার্থীদের এখনই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত কর্তারা।
বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কেন এই বিতর্ক? এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ৩৪ শতাংশ প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। শাসক দলের হিংসার কারণে প্রার্থী দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। বিনা ভোটে জয়ীদের নামে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির উপরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। ৬ অগস্ট পরবর্তী শুনানি। সে দিনই কিছু একটা নির্দেশ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে কোর্ট। ফলে তত দিন ঝুলেই থাকবে বিনা ভোটে জেতা প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ।
কিন্তু তার সঙ্গে ভোটে জেতা ৬৬ শতাংশ প্রার্থীর ভাগ্যও জড়িয়ে গিয়েছে। কারণ, পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত আইনে কোথাও বলা নেই যে আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করা যাবে। অথচ, আইন অনুযায়ী প্রত্যেক নির্বাচিত সদস্য-সদস্যার নামে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয় পঞ্চায়েত দফতরকে। তবেই বোর্ড গঠন শুরু হতে পারে।
যদিও পঞ্চায়েত কর্তাদের অন্য অংশের বক্তব্য, গত ১০ মে যেখানে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে বিজয়ীদের নামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। সেই নির্দেশ পঞ্চায়েত দফতর পালন করতেই পারে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আইনে যেমন একাধিক বিজ্ঞপ্তি জারির কথা স্পষ্ট ভাবে বলা নেই, তেমনই তা করা যাবে না সে কথাও বলা হয়নি।’’
এই দুই মতের ফাঁপরে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ চেয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েত মামলা ফের কোর্টে ওঠার আগে মুখ্যমন্ত্রী বিজ্ঞপ্তি জারির অনুমোদন দেন কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy