মনোজ টিগ্গা।—ফাইল চিত্র
ডুয়ার্সের চা বলয় থেকে এক রাজ্যের দূরত্ব সতেরশো কিলোমিটার, অন্যটির তেরোশো কিলোমিটার। রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়। লোকসভা ভোটের আগে দুই রাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক ‘দূরত্ব’ বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ চা বাগানের বিজেপি শিবিরের। মঙ্গলবার বেলা যত গড়িয়েছে এই এলাকার পদ্ম শিবিরের নেতাদের কপালে ভাঁজ বেড়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলায় বিজেপির একমাত্র বিধায়ক মনোজ টিগ্গা খোলাখুলিই স্বীকার করে নিচ্ছেন, সামনে লড়াই কঠিন।
এ দিন সকাল থেকে তাঁর মোবাইলে ঘনঘন ফোন এসেছে বিজেপির নেতা-সমর্থকদের। প্রতি ফোনেই তাঁকে অবধারিত ভাবে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘লোকসভা ভোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’ আপাতত দলীয় কর্মীদের মনোবল ফেরানোই লক্ষ্য বলে দাবি বিধায়কের ঘনিষ্ঠদের। অন্য দিকে, চা বলয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব অটুট রাখতে প্রশাসনের মতো স্থানীয় নেতাদের প্রতিটি চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যা শোনার নির্দেশ দিয়েছে জেলা তৃণমূলও।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির ভোট বেড়েছিল ৬ শতাংশ। তার বছর দুয়েক পরে বিধানসভা ভোটে জেলার প্রতিটি কেন্দ্রেই বিজেপির ভোট ২০ থেকে ৩৭ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। যা চিন্তা বাড়ায় তৃণমূলের। গত পঞ্চায়েত ভোটেও জেলার ফল যথেষ্ট ভাল বলে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়। একটি জেলা পরিষদ আসনও দলের ঝুলিতে আসে। বিজেপির দাবি, পুরোটাই সম্ভব হয়েছে চা বলয়ের জন্য। চা বলয়ের নেতাদের দিল্লিতে ডেকে বৈঠকও করেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। দলের একটি সূত্রের দাবি, আগামী লোকসভা ভোটে চা বাগানের ছেলে মনোজ টিগ্গাকে ‘মুখ’ করেই এগোনোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল সেই পরিকল্পনায় কতটা জল ঢালল, তা নিয়ে এখন জল্পনা চলছে বিজেপিতে। দলের রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি চা বাগানে উজ্জ্বলা প্রকল্প-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প সকলে যথাযথ ভাবে পাচ্ছে কিনা, তার উপরে জোর দিতে। প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা চলছে। মনোজ বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাস চা শ্রমিকরা দেখেছেন। আর ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান তো অনেক দূরে। সে সব নিয়ে ভাবছি না।”
আলিপুরদুয়ারের প্রতিটি বাগানে প্রশাসনের কর্তারা পৌঁছে শ্রমিকদের সমস্যা শুনতে শুরু করেছেন। এবার তৃণমূলের নেতারাও যাবেন। সেই কর্মসূচি দ্রুত শুরু করতে চাইছে তারা। চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা বলব। চা শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy