Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নানুরে যুবকের মৃত্যু, মহিলাকে গণপিটুনি

খবর পেয়ে পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নানুর থানায় নিয়ে যায়। থানায় আশ্রয় নেন তাঁর পরিজনেরাও। ওই এলাকা নওয়ানগর-কড্ডা পঞ্চায়েতের অধীনে।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানুর শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১৭
Share: Save:

অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল গ্রামের এক যুবকের। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের টানাপড়েনে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন, এই অভিযোগে শুক্রবার গণপিটুনি দেওয়া হল এক মহিলাকে। মৃতের স্ত্রীর বক্তব্য, ওই মহিলাকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে গ্রামবাসীদের তিনিই অনুরোধ করেছিলেন। ঘটনাটি বীরভূমের নানুরে খুজুটিপাড়া গ্রামের।

খবর পেয়ে পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নানুর থানায় নিয়ে যায়। থানায় আশ্রয় নেন তাঁর পরিজনেরাও। ওই এলাকা নওয়ানগর-কড্ডা পঞ্চায়েতের অধীনে। তার প্রধান তারক মেটের দাবি, ‘‘শনিবার সকালে ঘটনাটি জেনেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছি।’’ নানুর থানা সূত্রে খবর, মহিলার অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, ‘মৃত্যুর ঘটনার জেরে সন্দেহবশত গ্রামের জনাদশেক মহিলা আমাকে বাড়িতে ঢুকে মারধর করেন। মারের চোটে আমার কাপড় খুলে যায়।’ অন্য দিকে, ওই মহিলার বিরুদ্ধে স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের স্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেছেন, ‘‘সব অভিযুক্তকে ধরা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ওই মহিলার। তিনিও বিবাহিত। বৃহস্পতিবার ওই যুবক বিষ খান। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, শুক্রবার মৃতদেহ নিয়ে আসার পরে গ্রামের কয়েক জন মহিলা ওই মহিলাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে। শুক্রবার বিকেলে গ্রামে গিয়ে পুলিশ দেখে, ওই মহিলাকে একটি বাড়ির পিছনে বসিয়ে রাখা হয়েছে। পরনে নাইটি। স্থানীয় কয়েক জন মহিলা তাঁকে ঘিরে রেখেছিলেন।

শনিবার খুজুটিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি তালাবন্ধ। মহিলার মায়ের অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার লাঠি নিয়ে এক দল মহিলা আমার মেয়ের উপর চড়াও হয়। ওরা মেয়েকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমি আর মেয়ে কয়েক দিন সময় চাইলে মারধর করে। মেয়েকে বিবস্ত্র করে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে যায়।’’ গ্রামের কয়েক জন মহিলার কথায়, ‘‘ওই সম্পর্ক নিয়ে বারবার সাবধান করলেও মেয়েটি শোনেনি। তাই ওকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। ও বচসা শুরু করায় ঝামেলা বেধে যায়।’’ তবে তাঁদের দাবি, ওই মহিলাকে বিবস্ত্র করে গ্রামে ঘোরানো হয়নি। টানাটানিতে তাঁর পোশাক খুলে গিয়েছিল। আর মৃত যুবকের স্ত্রী-র অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলা আমার স্বামীর কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। সেই চাপেই ও বিষ খায়। এ জন্যই ওকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nanur Lynching Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE