Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Lockdown

‘পুলিশ এসে মেরে আমার হাত ভেঙে দিল’

পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে। শ্যামনগরের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, লকডাউনের সময় বাইরে বেরনোয় পুলিশ তাঁকে মারধর করে। ঘটনায় তাঁর হাত ভেঙে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

অনুপম খাসনবিসের এক্স রে রিপোর্ট।

অনুপম খাসনবিসের এক্স রে রিপোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ১৮:৫৯
Share: Save:

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় রাজ্যে লকডাউন পরিস্থিতিতে পুলিশকে মানবিক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনাও ঘটছে।

পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে। শ্যামনগরের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, লকডাউনের সময় বাইরে বেরনোয় পুলিশ তাঁকে মারধর করে। ঘটনায় তাঁর হাত ভেঙে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

শ্যামনগরের ওই বাসিন্দা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার। তিনি জানান, পুলিশের লাঠির ঘায়ে প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে গুরুতর চোট পান হাতে। কনুইয়ের কাছে হাড় ভেঙে যায়। এর পর চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁকে ঘুরতে হচ্ছে হাসপাতালে, নার্সিংহোমে। একে লকডাউনের এই সময়ে রোজগার নেই, তার উপর চিকিৎসার জন্য বিপুল খরচা। শ্যামনগরের ওই বাসিন্দার বক্তব্য, “কী কারণে রাস্তায় এসেছিলাম, কেন দাঁড়িয়ে ছিলাম, কোনও খোঁজ না নিয়েই মারতে শুরু করলেন ওঁরা। সতর্ক করতে পারতেন। কিন্তু সে সব না করে মারধর! পুলিশকে কি মারার কথা বলা দেওয়া হয়েছিল?”

আরও পড়ুন: এ বার বেলঘরিয়ার প্রৌঢ় করোনায় আক্রান্ত, নিয়ে যাওয়া হল আইডি-তে

জগদ্দল থানা এলাকার শ্যামনগরের নিরঞ্জন সেন পল্লিতে বাড়ি অনুপম খাসনবিসের। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ির কাছে ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সোমবার বিকেলে রাজ্যের সমস্ত পুরসভায় লকডাউন ঘোষণা হয়। অনুপমের কথায়: “হঠাৎ করে লকডাউন হয়ে যাওয়ার পর কী করব, তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। আমার অর্শ্বের সমস্যা রয়েছে। কাছাকাছি কোনও ডাক্তার পাব কি না, রাস্তায় দাঁড়িয়ে তা-ও জিজ্ঞেস করছিলাম এক পরিচিতকে। তখনই একটি পুলিশের গাড়ি আসে। কিছু বলার আগেই মারতে শুরু করে। প্রাণ ভয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যাই। গুরুতর আঘাত পাই হাতে।”

মারের চোটে হাতে কালসিটে পড়েছে অনুপম খাসনবিশের।

অনুপম ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রি সংক্রান্ত কাজ করেন। কিন্তু, লকডাউনের পর চিন্তায় ছিলেন তিনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে যখন কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই সময়ে পুলিশের একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। কোনও কথা না বলে পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এর পুলিশ চলে যায়। কিন্তু রাস্তায় পড়ে গিয়ে ডান হাতের কনুই ভেঙে যায় অনুপমের। তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারাকপুরের বিএন বোস হাসপাতালে। সেখান থেকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

আরও পড়ুন: নিজামউদ্দিনে সেই জমায়েতে ছিলেন এ রাজ্যেরও বহু মানুষ, চলছে খোঁজ

অনুপম বলেন, “আরজি কর হাসপাতালে আমার হাতের প্লাস্টার করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার পর প্রতি দিন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি। গাড়ি চলাচল বন্ধ। বর্তমানে নৈহাটির একটি নার্সিংহোমে দেখাচ্ছি। সেখানে প্রচুর টাকা চাইছে। কোথা থেকে পাব টাকা? লকডাউনের মধ্যে সংসার চালাব, না কি এই ভাঙা হাত নিয়ে ছুটে বেড়াব!”

(এ প্রসঙ্গে জগদ্দল থানার ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ কাজে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lockdown Corona Coronavirus Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE