নবনীতা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
ক্যানসারের মতো মারণব্যধির সঙ্গে ‘লড়াই’য়ে জিতে ফিরেছেন নিজে। এবার অন্যদেরও সেই ‘লড়াইয়ের ময়দানে’ জিততে অনুপ্রাণিত করছেন। যার জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মানিত হচ্ছেন পাঁশকুড়ার এক কিশোরী।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালে। পাঁশকুড়ার দক্ষিণ চাঁচিয়াড়ার বাসিন্দা নবনীতা মণ্ডলের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে আসে। নবনীতা জানতে পারেন, তিনি ‘লিম্ফোমা হার্ট, লাঙ্স ইনফেকশনে’র দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছেন। মেয়ের চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে পাড়ি দেন নবনীতার বাবা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। পরিবার সূত্রের খবর, সেখানে কেমোথেরাপির পরে ফিরে এসে তমলুকেও কেমোথেরাপি করান নবনীতা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও হয় রেডিওথেরাপি।
২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের মার্চ— এই ক’টা বছরের লড়াইয়ে ‘জয়ী’ হন নবনীতা। বর্তমানে তিনি ক্যানসার মুক্ত। এখন নবনীতা পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার সঙ্গে তিনি যুক্ত হয়েছেন ময়নার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে। ওই সংস্থার মাধ্যমেই এখন নবনীতা অন্য ক্যানসার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তিনি তাঁদের শোনান নিজের জীবন-যুদ্ধের কথা। আর একজন ক্যানসার জয়ীর মুখে সেই যুদ্ধের কথা শুনে উজ্জীবিত হন বহু রোগী।
নবনীতার ওই কাজের জন্য তিনি এবার সম্মানিত হচ্ছেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে পুরস্কৃত করেছে আমেরিকার ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অফ লাঙ ক্যানসার’। কানাডার টরেন্টোয় ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ লাঙ ক্যানসার’ (আইএএসএলসি) সম্মেলনে নবনীতাকে ‘পেশেন্ট অ্যাডভোকেসি ওয়ার্ডে’ সম্মানিত করে। ময়নার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে এ জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছিল। আবার একই কাজের জন্য ‘ইউরোপিয়ান স্কুল অফ অঙ্কোলজি’র উদ্যোগে ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার ইন ইয়ং ওম্যান’ সেমিনারে নবনীতা ফের পুরস্কৃত হচ্ছেন ‘পেশেন্ট অ্যাডভোকেসি অ্যায়ার্ডে’এ। উল্লেখ্য, নবনীতার সাথে একই পুরস্কার পাচ্ছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার আদিত্য মান্নাও।
নবনীতা জানিয়েছেন, এ জন্য আজ, বৃহস্পতিবারই তাঁরা সুইৎজারল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা হচ্ছেন। তাঁর মা অনিমাদেবী বলেন, ‘‘ওঁর ক্যানসারের খবর শুনে ভেঙে পড়েনি। চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছি।’’
ভগবানপুরের ছাত্রী সুদেষ্ণা মাইতিও ক্যানসার আক্রান্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমি ক্যানসার আক্রান্ত। নবনীতা বাড়ি এসে আমাকে প্রেরণা দিয়েছিল। এখন মনে হয় ক্যানসারকেও হার মানানো যায়। ওর আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়ার খবর শুনে খুশি হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy