Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্রমে কোণঠাসা হচ্ছেন গুরুঙ্গ

পুলিশ মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গ-সিকিম সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া রঙ্গিত নদীর ধারেকাছে জঙ্গলেই গুরুঙ্গ সদলবল লুকিয়ে রয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে ড্রোনের মাধ্যমে ওই তল্লাটে তল্লাশি চালানো হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৮
Share: Save:

বৃহস্পতিবার রাতের তল্লাশিতে প্রায় ধরা পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশের সঙ্গে টানা গুলির লড়াইয়ের সময়ে মোর্চার সশস্ত্র বাহিনীর ‘কভার ফায়ার’-এ কোনও ক্রমে পালিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। পুলিশের কাছে খবর, পাহাড়ে ফিরে আসার পরিকল্পনায় ধাক্কা খেয়ে গুরুঙ্গ ফের আশ্রয় নিয়েছেন সিকিমে। কিন্তু ঠিক কোথায় তাঁর ডেরা, তা নির্দিষ্ট করা যাচ্ছে না। যদিও পাহাড়ে থাকা এক পুলিশ কর্তার দাবি, ‘‘গুরুঙ্গের গ্রেফতারি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

পুলিশ মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গ-সিকিম সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া রঙ্গিত নদীর ধারেকাছে জঙ্গলেই গুরুঙ্গ সদলবল লুকিয়ে রয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে ড্রোনের মাধ্যমে ওই তল্লাটে তল্লাশি চালানো হয়েছে। দার্জিলিঙের এক পুলিশ কর্তা জানান, ড্রোনের মাধ্যমে বহু তথ্যই মিলেছে। তবে কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে। বড় গাছের কারণে ড্রোনের ক্যামেরা নজর করতে পারছে না। তবে তল্লাশির ছবি যাচাই করে রঙ্গিতের আশেপাশে অস্থায়ী ঘাঁটির কিছু চিহ্ন দেখা গিয়েছে।

পুলিশ কর্তাদের একাংশ জানান, সমতলের পুলিশদের নিয়ে গুরুঙ্গকে ধরা কঠিন কাজ। কারণ, তাঁরা পাহাড়ি পথের সঙ্গে পরিচিত নন। বাহিনী সিকিম সীমানার কাছাকাছি যাওয়া মাত্র গুরুঙ্গের কাছে খবর চলে যাচ্ছে। তিনিও ‘চোরা বাটো’ বা পাহাড়ি সরু পথে চম্পট দিচ্ছেন। আর তিনি যখন সিকিমে চলে যাচ্ছেন, তখন এ রাজ্যের পুলিশের কিছু করার থাকছে না।

পুলিশ কর্তাদের অন্য আশঙ্কাও রয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, গুরুঙ্গকে ধরতে গিয়ে যদি বহু প্রাণহানি হয়, তা হলে পাহাড়ের পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। গুরুঙ্গ তখন ফের নিজের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় উঠেপড়ে লাগতে পারেন। তাই অপারেশন চালাতে হচ্ছে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে।

পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, গুরুঙ্গের ব্যবহার করা টেলিফোনের উপরে নজরদারি চালিয়েই তাঁর ‘লোকেশন’ জানার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু ইদানীং তিনি টেলিফোন ব্যবহার না করায় চাপে পড়েছেন গোয়েন্দারা। এখন গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠদের টেলিফোনের কথাবার্তা থেকেই তাঁর অবস্থান আন্দাজ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে হাজারখানেক টেলিফোন ‘মনিটর’ করা হচ্ছে। তার পরেও অধরা গুরুঙ্গ।

তবে বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপাদের হাত ধরে পুলিশের হাতে এমন কিছু ‘সোর্স’ এসেছে, যাঁরা কিছু দিন আগেও ছিলেন গুরুঙ্গের খাস লোক। এঁরাই এখন পুলিশের তুরুপের তাস। বৃহস্পতিবার রাতে গুরুঙ্গের অবস্থানের খবর সে ভাবেই এসেছিল বলে পুলিশের একাংশের দাবি।

এই অবস্থায় গুরুঙ্গ অনুগামীদের একাংশ চাইছেন তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করুন। সে ক্ষেত্রে দেরিতে হলেও ইউএপিএ-র হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে বলে তাঁদের মত। এ দিনই গুরুঙ্গপন্থী যুব নেতা সন্দীপ লামা এক অডিও বার্তায় বলেছেন, ‘‘কোনটা ষড়যন্ত্র, কোনটা সঠিক, তা এক দিন প্রমাণ হবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE