— ফাইল চিত্র।
কলকাতা ছেড়ে তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়। সেটা ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি। ২৩ এপ্রিল কাশ্মীরের সোনমার্গের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের দু’জনকে।
১৫ এপ্রিল থেকে ধরা পড়ার আগের দিন, অর্থাৎ ২২ এপ্রিল— এই সময়ের মধ্যে ৬টি মোবাইল নম্বরের বিস্তারিত কল ডিটেলস ছিল রাজ্য পুলিশের কাছে। যার মধ্যে সুদীপ্ত, দেবযানী ছাড়াও তাঁদের সহযোগীদের নম্বরও ছিল। অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে বেড়ানোর সময়ে সেই সব ফোন থেকে তাঁরা রাজ্যের বহু প্রভাবশালীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেটা জানিয়েছেন, এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধান অভিযুক্তদের মোবাইল কথোপকথনের তথ্য রাজ্যের হাতে থাকা সত্ত্বেও তা তুলে দেওয়া হয়নি সিবিআইয়ের হাতে। অথচ ২০১৪ সালের ৯ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল রাজ্য পুলিশের। সংশ্লিষ্ট মোবাইল সংস্থা সিবিআই-কে জানিয়েছে, ওই ৬টি নম্বরের তথ্য প্রায় ৬ বছর আগে রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
সুদীপ্ত-দেবযানী ও তাঁদের সহযোগীদের অন্য আরও ৬টি মোবাইল নম্বর দিয়ে এ দিন শীর্ষ আদালতে সিবিআই অভিযোগ করেছে, প্রায় এক বছরের কল রেকর্ডস এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া, অভিযুক্তদের আরও ৩টি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে সিবিআইয়ের অভিযোগ, এক বছরের কল ডিটেলস (২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল) হাতে থাকা সত্ত্বেও মাত্র আড়াই মাসের কল ডিটেলস দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, যে হেতু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই সারদা তদন্তে নেমেছে, তাই তাদের সঙ্গে এই ধরণের অসহযোগিতার অর্থ আদালত অবমাননারই সামিল।
সোমবারে সিবিআই-এর করা ৬ পাতার এই হলফনামার লিখিত জবাব দিতে চেয়েছে রাজ্য সরকারও। এ দিন আদালতে রাজ্যের আইপিএস অফিসার রাজীব কুমারের আইনজীবী সুনীল ফার্নান্ডেজ জানিয়েছেন, বিষয়টি নতুন। জবাব দেওয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় চাই। কিন্তু, আদালত জানিয়েছে, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যকে জবাব দিতে হবে।
এর আগে রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার যে আবেদন সিবিআইয়ের তরফে করা হয়েছিল, গত শনিবারের মধ্যে সেই সংক্রান্ত একটি জবাব দেওয়ার কথা ছিল সিবিআইয়ের। কিন্তু, আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই জবাব জমা পড়েনি। সোমবারে সেই মামলারই শুনানি ছিল। সেখানেই নতুন করে মোবাইল ফোনের কল ডিটেলস নিয়ে অভিযোগ তোলে সিবিআই।
রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব জানিয়েছেন, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার যে আবেদন সিবিআই করেছিল, তার বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল রাজীব হলফনামা জমা দেন। সেখানে শিলং-এ জেরার পূর্ণ ভিডিও পেশ করার জন্য আবেদন করেন তিনি। সেই সময়ে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আদালতে জানিয়েছিলেন, শনিবার, ২০ এপ্রিলের মধ্যে সিবিআই এর জবাব দেবে। বিশ্বজিতবাবুর কথায়, ‘‘শনিবার জবাব দেয়নি। আজও জবাব দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় চায়নি। তার মানেই তো সিবিআইয়ের জবাব দেওয়ার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy