Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আতঙ্কে স্কুলই এড়াচ্ছে পড়ুয়ারা

এলাকার নাম কাঁকিনাড়ার কাছারি রোড। টানা এক মাস ধরে বোমাবাজি, গুলিগোলা, অশান্তিতে এখানকার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না অভিভাবকেরা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাটপাড়া শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

স্কুলে যেতে বললে ওরা কাঁদছে!

শুধু টিউশন নিতে যেতে বললে ওরা ভয়ে মায়ের আঁচল আঁকড়ে ধরছে! কেউ পড়ার জন্য ঘর ছেড়েছে। কেউ আবার ঘরে বই খুলে বসলেও মন দিতে পারছে না!

এলাকার নাম কাঁকিনাড়ার কাছারি রোড। টানা এক মাস ধরে বোমাবাজি, গুলিগোলা, অশান্তিতে এখানকার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না অভিভাবকেরা।

গরমের ছুটির পরে গত ১০ জুন এখানকার স্কুলগুলি খোলে। কিন্তু গোলমালের জেরে স্কুলগুলিতে অধিকাংশ পড়ুয়াই যাচ্ছিল না। পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে উদ্যোগী হয়ে দোকান-বাজার

খুলিয়েছিল। মানুষকে অভয় দিয়েছিল। তার জেরে অনেকদিন পরে স্কুলগুলিতে বেশি পড়ুয়া আসে। কিন্তু বেলা বাড়তেই ফের অশান্তি। গুলিতে দু’জন খুন।

গোলমালের খবর পেয়েই স্কুলের দরজা-জানলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন কাঁকিনাড়া ভারতী বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষ। প্রদীপ সাউ নামে এক শিক্ষক রাস্তার অবস্থা দেখতে গিয়ে গুলিতে জখম হন। তাঁর বাঁ হাতে গুলি লাগে। পরে গোলমাল থামলে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে যান। কিন্তু সেই গোলমাল ছাপ ফেলেছে ছাত্রছাত্রীদের মনে।

ওই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রসাদ গরমের ছুটির পরে বৃহস্পতিবারই প্রথম স্কুলে গিয়েছিল। শুক্রবার থেকে সে আর স্কুলমুখো হতে চাইছে না। চাইছে না বাড়ি থেকে বেরোতেও। বেরনোর কথা উঠলেই সে কেঁদে উঠছিল বারবার। তার বাবা ভগবান প্রসাদ এ দিন বলেন, ‘‘স্কুলে পাঠাব কী করে? মেয়ে খালি কাঁদছে। টিউশন নিতেও যেতে চাইছে না। কী যে করি!’’

একই অবস্থা ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির প্রবীণ সাউ, তৃতীয় শ্রেণির প্রকাশ প্রসাদ, চতুর্থ শ্রেণির রবি সাউদেরও।

শুধু ছোটরাই নয়, আতঙ্কে রয়েছে কিছুটা উঁচু ক্লাসে পড়া পড়ুয়ারাও। কাঁকিনাড়া গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী প্রতিভা সাউ বলে, ‘‘পড়াশোনার খুব ক্ষতি হচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে মাধ্যমিক দিতে পারব তো!’’ কাঁকিনাড়া বয়েজ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র সুভাষ প্রসাদ কয়েক দিন আগে হাওড়ায় মামাবাড়ি চলে গিয়েছে। তার বাবা ভগবতী প্রসাদ বলেন, ‘‘ছেলেটা যাতে ওখানে পড়াশোনা চালাতে পারে তাই পাঠিয়ে দিয়েছি। ও এখানে থাকতেই ভয় পাচ্ছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatpara Bhatpara Biolence ভাটপাড়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE