প্রতীকী ছবি।
দরজার ঠিক পাশেই ঝুলছে একটি চকচকে ফ্লেক্স। সেখানে নীলের উপরে সাদা কালিতে লেখা— ‘মাতৃদুগ্ধপান কক্ষ’।
মুর্শিদাবাদের রানিনগর ২ ব্লক অফিসে ঢুকে ঘরটা দেখেই প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন নার্গিস বিবি, রুবিয়া সরকার। তার পরে স্বস্তির শ্বাস ফেলে ওঁরা বলছেন, ‘‘যাক, ব্লক অফিসের বাবুরা তা হলে আমাদের সমস্যার কথা বুঝতে পেরেছেন! কোলের বাচ্চাকে নিয়ে বড় বিপাকে পড়তে হত। এ বার একটা সুরাহা হল।’’
সম্প্রতি কলকাতার সাউথ সিটি মলে সন্তানকে স্তন্যপান করানোয় আপত্তি তুলেছিলেন নিরাপত্তাকর্মী। তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ক্ষুব্ধ বহু মহিলা জানিয়েছেন, ‘‘শপিং মলে বাচ্চাকে নিয়ে গেলে সঙ্গে বোতলে দুধও নিয়ে যাব। কিন্তু এমন অপমান সহ্য করব না।’’
অভিযোগ, বহু শপিং মল তো বটেই, রাজ্যের সরকারি বিভিন্ন অফিসেও স্তন্যপান করানোর ব্যবস্থা নেই। সেখানে একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা একটি ব্লক অফিসে এমন পদক্ষেপ রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল উদ্বোধন করেন ওই মাতৃদুগ্ধপান কক্ষের। তিনি বলছেন, ‘‘অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ। জেলা পরিষদ-সহ জেলার অন্য পঞ্চায়েত সমিতিতেও এমন ব্যবস্থা করা হবে।’’
রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহ আলম সরকার বলেন, ‘‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বহু মহিলা নানা প্রয়োজনে নিত্যদিন অফিসে আসেন। তাঁদের সঙ্গে শিশুরাও থাকে। আলাদা ঘর না থাকায় খুব সমস্যা হত। সেটা মাথায় রেখেই আমরা এই ঘর তৈরি করেছি।’’
পর্দা ঘেরা ওই ঘরে রয়েছে বসার জায়গা, বাচ্চাদের শয্যা, দোলনা, ন্যাপকিন ও নানা রকম খেলনা। পরে ওই ঘরকে আরও ভাল ভাবে সাজানো হবে বলে জানিয়েছেন রানিনগর ২ বিডিও পার্থ চক্রবর্তী।
সীমান্তের এই ব্লক অফিসের এমন পদক্ষেপের কথা শুনে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা অত্যন্ত জরুরি একটা পদক্ষেপ। সম্প্রতি কলকাতার শপিং মলে যা হল তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার। বড় বড় শপিং মল যা করতে পারে না, তা কিন্তু করে দেখাল সীমান্তের একটি ব্লক অফিস।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy