প্রতীকী ছবি।
এক বছরেরও বেশি সময় বন্ধ আছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পারস্পরিক বদলি এবং বিশেষ বদলি। সাধারণ বদলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অবশ্য তারও আগে, ২০১৫ থেকে। এতে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই অসুবিধায় পড়েছেন। অবশেষে তাঁদের দুর্ভোগের কিছুটা সুরাহা হতে চলেছে।
কিছুটা। কেননা ‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার’ বা পারস্পরিক বদলি এবং ‘ট্রান্সফার অন স্পেশ্যাল গ্রাউন্ড’ বা বিশেষ কারণে বদলির প্রক্রিয়া আবার শুরু করতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বুধবার বলেন, ‘‘দু’-এক দিনের মধ্যেই এই দু’ধরনের বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।’’ তবে ‘জেনারেল ট্রান্সফার’ বা সাধারণ বদলি এখনই চালু হচ্ছে না।
বছরখানেক আগে বদলি নিয়ে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, বিশেষ কারণে বদলি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। মোটামুটি সেই সময়েই বন্ধ হয়ে যায় পারস্পরিক বদলিও। আর সাধারণ বদলি বন্ধ আছে ২০১৫ সাল থেকে।
দীর্ঘদিন বদলি বন্ধ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়েন আতান্তরে। তাঁদের অনেকে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে বদলির আবেদন করে যেতে থাকেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরে গত এক বছরে বদলির জন্য প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এসএসসি-প্রধান সৌমিত্রবাবু জানান, বিকাশ ভবন থেকে বদলির জন্য দু’হাজারেরও বেশি আবেদনপত্রের তালিকা তাঁদের দফতরে এসেছে। বিকাশ ভবন থেকে পাওয়া ওই তালিকা অনুযায়ী তাঁরা বিভিন্ন জেলার স্কুল পরিদর্শকের কাছে বদলির আবেদনপত্রগুলি পাঠিয়ে দেবেন।
গত মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসসি-কে নির্দেশ দেন, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে হবে। সেই সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী শিক্ষক বদলির বিষয়ে কিছু না-বললেও শিক্ষা সূত্রের খবর, পার্থবাবু বদলির প্রক্রিয়াও দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেন। তার জেরেই শুরু হচ্ছে বদলি প্রক্রিয়া। তবে এসএসসি-প্রধান জানিয়ে দিয়েছেন, যে-সব শূন্য পদ এসএসসি-র নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি, আপাতত বদলি করা হবে শুধু সেগুলিতেই।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেশি সমস্যায় পড়েছেন পারস্পরিক বদলি ও বিশেষ কারণে বদলির প্রক্রিয়া এক বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকায়। শেষ পর্যন্ত এই দু’ধরনের বদলির প্রক্রিয়া আবার শুরু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির প্রক্রিয়া আবার শুরু হচ্ছে, এটা খুব ভাল খবর। কিন্তু দেখতে হবে, এই সব বদলিতে যেন রাজনৈতিক নেতাদের কোনও প্রভাব না-থাকে। বদলি প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রত্যাশিত স্বচ্ছতা থাকতে হবে।’’ নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)-র রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের মতে, মিউচুয়াল ট্রান্সফার বা পারস্পরিক বদলির ব্যাপারটা বিশেষ কারণে বদলির থেকে অনেক বেশি স্বচ্ছ। দেখা যায়, গ্রামের দিকে কোনও স্কুলে পড়ুয়াদের থেকে শিক্ষক কম আবার শহরে ছাত্রের থেকে শিক্ষক বেশি। ‘‘পারস্পরিক বদলিতে এই সমস্যার সমাধান হয়,’’ বলছেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন করে বদলির আবেদন করার উপরে যে-বিধিনিষেধ জারি হয়েছিল, সেটাও তুলে নেওয়া হোক।’’
এ দিনই এসএসসি-র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ৪ জুন উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য তৃতীয় দফার নথি যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। এ বার নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য ১০ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হচ্ছে। শূন্য পদ ১৪ হাজারের মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy