কলকাতার বাসিন্দারা যে পরিস্রুত, বিশুদ্ধ এবং নলবাহিত পানীয় জল খান, রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের মানুষদেরও সেই জলই খাওয়াবে রাজ্য সরকার।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সরকারি উদ্যোগে কয়েকটি জল প্রকল্প চালু হয়েছে। আরও তিনটি জল প্রকল্পের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)-এর কাছ থেকে ২০১৬ কোটি টাকা ঋণ মিলবে বলে শুক্রবার সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে রাজ্য। ওই তিনটি প্রকল্পের একটি নন্দীগ্রাম, একটি বাঁকুড়া ও তৃতীয়টি হাড়োয়া থেকে রাজারহাট পর্যন্ত হবে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং জাপানের জাইকার কাছ থেকেও ঋণ নিয়ে আরও কয়েকটি জল প্রকল্প তৈরি করবে রাজ্য সরকার।
ভারত চেম্বার অব কমার্সের দফতরে ‘পশ্চিমবঙ্গের গ্রামোন্নয়নের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এ দিন বক্তৃতা করেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানের শেষে সুব্রতবাবু জানান, তিনটি জল প্রকল্পের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ২০১৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা এ দিনই কেন্দ্রকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছে এডিবি। হাড়োয়া-রাজারহাট প্রকল্পে গঙ্গা থেকে জল তুলে তা থেকে আর্সেনিক, ফ্লোরাইড-সহ সব দূষণকারী পদার্থ বাদ দেওয়া হবে। তার পর সেই পরিস্রুত জল পাইপলাইনের মাধ্যমে মানুষকে দেওয়া হবে। এতে খরচ হবে ৬৮৬ কোটি টাকা। নন্দীগ্রাম এবং বাঁকুড়ার জল প্রকল্পে খরচ হবে যথাক্রমে ৪৭৭ কোটি এবং ৮৩৩ কোটি টাকা। মন্ত্রী আরও জানান, পুরুলিয়ার ২০টি ব্লকে ৯০টি জল প্রকল্পের জন্য ঋণ দিতে মৌখিক ভাবে রাজি হয়েছে জাইকা।
মঙ্গলবার তিনটি জল প্রকল্পের বিষয়ে সুব্রতবাবুর সঙ্গে এডিবি-র প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। সেই দিনই সুব্রতবাবুকে ঋণের ব্যাপারে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁরা। কেন্দ্রের কাছে এ দিন এডিবি-র বার্তা এসে যাওয়ার জল প্রকল্পের কাজ শুরু হতে প্রকল্পের রিপোর্ট চূড়ান্ত করার কাজটি বাকি রইল। সেই জন্য নভেম্বরে ম্যানিলায় এডিবি-র দফতরে যাবেন সুব্রতবাবু ও কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকারের কয়েক জন প্রতিনিধি।
নদী, পুকুর, ঝিলের জল শোধন করে পানীয় জলে পরিণত করার কাজ করে কোরিয়ার একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘কে ওয়াটার’। ম্যানিলা থেকে সুব্রতবাবুদের কোরিয়ায় ওই সংস্থার কাজ দেখাতে নিয়ে যাবে এডিবি। এ রাজ্যে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক, ফ্লোরাইড-সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকায় তা পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা বিপজ্জনক। আর ওই সব পদার্থ বাদ দিয়ে জলকে পানের উপযোগী করার প্রক্রিয়া যথেষ্ট ব্যয়সাধ্য। তাই ‘কে ওয়াটার’-এর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এ রাজ্যের জলাশয়ের জল থেকে পানীয় জল তৈরি করতে চান সুব্রতবাবুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy