Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Kalyani University

উপাচার্য এখনও ক্ষোভের মুখোমুখি

দূরত্বটা যে ঘুচবে না, তার আঁচ মিলেছিল প্রজাতন্ত্র দিবসেই। 

উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪৬
Share: Save:

দূরত্বটা যে ঘুচবে না, তার আঁচ মিলেছিল প্রজাতন্ত্র দিবসেই।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ খাকি পোশাকে এসে প্রথমে পতাকা তুলেছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ। খানিক পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছন সহ-উপাচার্য গৌতম পাল। পতাকা তোলা ছাড়াও প্রজাতন্ত্র দিবসের অন্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা তিনি সম্পন্ন করেন। উপাচার্যের পতাকা উত্তোলনের সময়ে সেখানে ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। আবার সহ-উপাচার্যকে ঘিরে রেখেছিলেন তাঁর পক্ষে থাকা শিক্ষক, আধিকারিক এবং কর্মচারীরা।

রবিবারেই বোঝা গিয়োছিল, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটবে না। ঘটলও তা-ই। সোমবার সকাল থেকেই সহ-উপাচার্যের অনুগামীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেন। সেই সঙ্গে স্নাতকোত্তর স্তরের বিভিন্ন বিভাগের নানা সিমেস্টারও চলছে যথারীতি। এরই মধ্যে ওয়েবকুপার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান করেন। উপাচার্য-বিরোধী শিক্ষকেরা এসে একে-একে চিঠিতে সই করেন। সেই চিঠি আজ, মঙ্গলবার উচ্চ শিক্ষা দফতরের একাধিক জায়গায় পাঠানো হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

ওয়েবকুপার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের আহ্বায়ক নন্দকুমার ঘোষের বক্তব্য, ‘‘উপাচার্য কী ভাবে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আমরা শিক্ষা দফতরে মঙ্গলবারই চিঠি পাঠাচ্ছি। সেই মতো চিঠির বয়ানে সই সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, দিন দশেক আগে রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়কে বিশেষ ছুটিতে পাঠিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান কমিটি গড়া বা নিজের ঘনিষ্ঠ লোককে কার্যকরী রেজিস্ট্রারের পদে বসানো—উপাচার্য কোনও কিছুই আইন মেনে করেননি। সহ-উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পর থেকেই উপাচার্য তাঁকে সম্পূর্ণ আঁধারে রাখছেন। এর বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলন চালাবেন।

এ দিন দুপুরে তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারীরাও মিছিল করে উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থানে বসেন। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরাও মিছিল করে প্রশাসনিক ভবনের নীচের তলায় অবস্থান করেন। তাঁদের অভিযোগ, কোর্স ওয়ার্ক শুরু থেকে ঠিক সময়ে পরীক্ষা নেওয়া বা ফল প্রকাশ হয় না। অথচ ছ’মাসের মধ্যে পুরো কাজ করা উচিত। ওয়েবকুপা নেতা সুজয়কুমার মণ্ডলের দাবি, ‘‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা জরুরি।’’

উপাচার্য পাল্টা বলেন, ‘‘সহ-উপাচার্য ও সুজয় মণ্ডল কেমন লোক, তা সকলেই জানেন।’’ প্রশাসনের এক উচ্চস্তরের আধিকারিক আবার দাবি করে, শুধু ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইন্দ্রাণী কাঁড়ারের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দেবাংশু রায়ের বিরুদ্ধে কমিটি গড়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে অতি গুরুতর একটি লিখিত অভিযোগ রয়েছে, যা প্রমাণ হলে তাঁর চাকরি পর্যন্ত যেতে পারে। দেবাংশু রায় পাল্টা বলেন, ‘‘অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার জন্য এখন নানা কথা বলা হচ্ছে।’’ উপাচার্য জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আজ, মঙ্গলবার সকলের কাছে আবেদন করা হবে। তখনই জানানো হবে, কী ভাবে আইন মেনে সব হয়েছে বা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyani University Agitation WBCUPA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE