Advertisement
১১ মে ২০২৪
পোশাক বিতর্ক

পড়ুয়ারা সন্তানের মতো, মন্তব্য পার্থের

যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের নিয়ে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর বক্তব্য, এই পড়ুয়ারা সন্তানসম। এবং সন্তানদের উচিত সেই মর্যাদা রক্ষা করা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৮
Share: Save:

যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের নিয়ে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর বক্তব্য, এই পড়ুয়ারা সন্তানসম। এবং সন্তানদের উচিত সেই মর্যাদা রক্ষা করা। দিন কয়েক আগে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পোশাক এবং জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন সুব্রতবাবু। পড়ুয়ারা রুমালের মাপের পোশাক পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এলে তা অপসংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেছিলেন সুব্রতবাবু।

রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী তথা প্রাক্তন ছাত্রনেতা সুব্রতবাবুর ওই মন্তব্যের দায় নিতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্বের কেউই। এ দিনের আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এই নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেননি।

শুক্রবার সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত সপ্তাহ সমারোহে এসে প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু বলেন, ‘‘আমি সব সময় মনে করি, ছাত্রছাত্রীরা সন্তানসম। আমি তাদের এমন কোনও কাজে উত্সাহিত করতে পারি না, যা রুচিসম্মত নয়।’’ তবে কি পোশাক-বিতর্কে সুব্রতবাবুর বক্তব্যকেই সমর্থন করছেন শিক্ষামন্ত্রী? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘সমর্থনের কোনও প্রশ্নই নেই। পড়ুয়ারা সন্তানসম, সুতরাং সন্তানদেরও উচিত সেই মর্যাদা রক্ষা করা।’’

যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সির অপসংস্কৃতি রুখতে প্রয়োজনে তিন বছর ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখে তার খোলনলচে বদলের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে নানা মহলের তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এ দিন পার্থবাবুপ স্পষ্ট মন্তব্য, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কী করবে, সে সিদ্ধান্ত নেবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’’ সুব্রতবাবুর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খোলেন প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এত ভাল কাজ করছে প্রেসিডেন্সি, কেন তা বন্ধ হয়ে যাবে?’’ ওই বক্তব্যকে সমর্থন করে যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির মান ক্রমেই বাড়ছে। কাজ করলে বিতর্ক তো হবেই, কিন্তু উন্নয়নের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।’’ প্রেসিডেন্সির পাশাপাশি যাদবপুরের পঠনপাঠনের মান নিয়েও যে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়, সে মন্তব্যও করেছিলেন সুরঞ্জনবাবু। দুই উপাচার্যের পাশাপাশি প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুও প্রেসিডেন্সির উন্নতির কথাই জানিয়েছিলেন। সুব্রতবাবুর মন্তব্যের বিরোধিতায় শুক্রবার যাদবপুরের কলা বিভাগের পড়ুয়ারা ঢাকুরিয়া পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজনও করেন।

শুক্রবারই উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে বিধি-বিতর্ক প্রসঙ্গে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন প্রাক্তন উপাচার্য এবং শিক্ষাবিদদের মঞ্চ। মঞ্চের সম্পাদক বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার হরণের জন্য বিধিতে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে সংযোজন করা হয়েছে, তার বিরোধিতা করে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা। যত দ্রুত সম্ভব কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে এই সংযোজনগুলি প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনও সুরঞ্জনবাবুর কাছে এ নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। উপাচার্য জানিয়েছেন, সমস্ত শিক্ষক-আধিকারিক-পড়ুয়া-গবেষক তাদের বিধির খসড়া নিয়ে মতামত জানালেই কর্মসমিতির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা আচার্যকে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

partha chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE